প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি রেশন ডিলারদের। — ফাইল চিত্র।
নিত্যদিন সমস্যার মুখে পড়ছেন। আগেই জানিয়েছিলেন, সমস্যার সমাধান না হলে ডিসেম্বর থেকে রাজ্যে রেশন পরিষেবা বন্ধ করা হবে। এ বার সেই মর্মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিল রাজ্যের রেশন ডিলারদের সংগঠন। চিঠিতে তারা জানাল, সহ্যের শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়েছে পরিস্থিতি।
চিঠিতে নিজেদের দাবিদাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন রেশন ডিলারেরা। ন্যায্য মূল্যের রেশন দোকানগুলির লাভের পরিমাণ বৃদ্ধি করার দাবি তুলেছেন তাঁরা, যাতে ব্যবসায়ীরা সুষ্ঠু জীবনযাপন করতে পারেন। নেটওয়ার্ক, সার্ভারের সমস্যার কারণে রোজ ভুগতে হচ্ছে রেশন ডিলারদের, চিঠিতে জানিয়েছেন সে কথাও। প্রতি কুইন্টাল খাদ্যশস্যে এক কেজি নষ্ট হতে পারে ধরে নিয়ে অনুমোদন দেওয়া হোক। খাদ্যশস্য যাতে চটের ব্যাগে বহন করা হয়, সে বিষয়টি সরকারকে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন মেনে অনুদানও চেয়েছে তারা। যে সব রেশন ডিলারের কোভিডে মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও তোলা হয়েছে, যেমন রাজস্থান সরকার দিয়েছে।
সম্প্রতি রেশনের খাদ্যশস্য সংগ্রহের জন্য আধারের বায়োমেট্রিক যাচাই কার্যত বাধ্যতামূলক করেছে খাদ্য দফতর। এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়, পর্যায়ক্রমে ত্রিস্তর পদ্ধতিতে বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে সব গ্রাহকের আধার নম্বর দেওয়া রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক যাচাই আবশ্যিক। গ্রাহকের আধারের বায়োমেট্রিক যাচাই ছাড়া খাদ্য বণ্টন বন্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তেও বেজায় ক্ষুব্ধ ডিলার সংগঠন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রক সংসদে জানিয়েছে, আধার না থাকলেও বৈধ গ্রাহককে খাদ্য দিতে হবে। কিন্তু রেশন বন্টন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার নামে একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগের সুরাহা না হলে আগামী ডিসেম্বর মাস থেকেই রেশন পরিষেবা দেওয়া তাঁরা বন্ধ করে দেবেন বলে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রেশন ডিলারেরা।
যদিও এ প্রসঙ্গে খাদ্য দফতর জানিয়েছিল, রেশন ডিলারদের সংগঠন তাদের দাবিদাওয়ার কথা দফতরকে জানালে সে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু দফতর এ বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধান চায়। তাই শীঘ্রই দফতর তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশের দাবি ছিল, ৯৭ শতাংশ গ্রাহকের আধারের বায়োমেট্রিক যাচাইয়ে ই-কেওয়াইসি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। রেশন দোকানে ৯৯ শতাংশের বেশি লেনদেন চলছে বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের মাধ্যমেই। কোনও গ্রাহকের আধার না থাকলে তাঁর জন্য বিকল্প ব্যবস্থাও রয়েছে রেশন ডিলারদের কাছে।