মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক সময় খুব কাছে ছিলেন ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কো-অর্ডিনেটর রতন মালাকার। নিজস্ব চিত্র।
টিকিট না পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন বিদায়ী কো-অর্ডিনেটর রতন মালাকার। শুক্রবার পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণা হলে দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছে তাঁর ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। টিকিট পাননি বর্তমান কো-অর্ডিনেটর রতন। নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই প্রচার নেমে পড়েন কাজরী। সেই প্রচারে প্রথম থেকেই দেখা যায়নি রতনকে। আর মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন তিনি। ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর হওয়ার পাশাপাশি, বরো-৯-এর চেয়ারম্যানও তিনি। সেই রতনই স্বয়ং প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি স্বেচ্ছায় নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছি। কারও বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাই না।’’
২০০০ সালে ৭১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রথম বার তৃণমূলের প্রতীকে দাঁড়ান রতন। তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতার ইচ্ছাতেই তৃণমূলকর্মী রতনকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেন নেতারা। পরে ২০০৫ সালে ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে সরিয়ে আনা হয় তাঁকে। ২০০৫, ২০১০ ও ২০১৫ সালে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের ওয়ার্ড থেকেই কাউন্সিলর হন তিনি। কিন্তু এ বারের ভোটে প্রার্থী না হতে পারায় অভিমানী রতন। কারণ বরাবরই মুখ্যমন্ত্রীর সুনজরে থাকা রতন এখনও বুঝেই উঠতে পারছেন না কেন তাঁকে প্রার্থী করা হল না। ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুর কেন্দ্রের অংশ। মঙ্গলবারই ৭২ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন কলকাতার পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। ৭০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী না হতে পেরেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন। ২০১৫ সালের সচ্চিদানন্দকে হারিয়েছিলেন বিজেপি-র অসীম বসু। যিনি ৭০ ওয়ার্ডে এ বার তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর নিজের কেন্দ্রেই জোড়া নির্দল প্রার্থী হওয়ায় অস্বস্তিতে তৃণমূল। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের আশা, এঁরা উভয়েই ক্ষোভের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দলীয় নেতৃত্ব অবশ্যই কথা বলে ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করবেন। আগামী ৪ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন। তাই ওইদিন তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো যেতেই পারে। তবে সচ্চিদানন্দ ও রতনের বিরুদ্ধে কড়া কথাই শুনিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস কুমার। তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই অনেক কারণে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যান। আগামী ৪ তারিখ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। ওই দিন যদি তাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন, তা হলে ঠিক আছে। কিন্তু যদি তাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার না করেন, তা হলে আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।’’