শিলিগুড়ি পুরসভায় বিরোধী দলনেতার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল নান্টু পালকে। শনিবার দলের তরফে এই দায়িত্ব দেওয়া হল রঞ্জন সরকারকে। ঘটনাচক্রে, গত বিধানসভা ভোটে শিলিগুড়ি আসনে হারের পরে রঞ্জনবাবুকে দার্জিলিং জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেই রঞ্জনবাবুকে এবার পুরসভার পরিষদীয় দল নেতার পদে বসানোয় তৃণমূলের অন্দরেই নানা আলোচনা শুরু হয়েছে।
দলের রাজ্য স্তরের এক নেতা জানান, নান্টুবাবু ইদানীং এমন কিছু বিবৃতি দিয়েছেন তাতে শিলিগুড়ি পুরসভায় ক্ষমতাসীন বামেরা উদ্দীপ্ত হয়েছেন। তা ছাড়াও নান্টুবাবুর ভূমিকা নিয়ে দলনেত্রীর কাছে অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে বলেও একান্তে জানান তিনি। শনিবার পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘কিছু বিষয় নিশ্চয়ই রয়েছে। সেটা দলের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তা নিয়ে কিছু বলছি না। দলের কাউন্সিলররাই নান্টুবাবুর জায়গায় রঞ্জনবাবুকে নির্বাচিত করেছেন। নিয়ম মেনে দলের কাউন্সিলরদের সই করা সেই প্রস্তাব পুর কর্তৃপক্ষের কাছে আগামী মঙ্গলবার জমা করা হবে।’’ নান্টুবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার কিছু বলার নেই। দলের নির্দেশ মেনে চলব।’’
সম্প্রতি শহরে পাঁচ দিন পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ থাকার পর মেয়রের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগে তাঁর গাড়ি ঘেরাও করে তাঁকে প্রায় দেড় ঘণ্টা আটকে রেখেছিল তৃণমূল। কেন জল সরবরাহ পাঁচ দিন বন্ধ রাখতে হল তার কারণ ২৬ সেপ্টেম্বর জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের আধিকারিকরা পুরসভার কাউন্সিলরদের সামনে তুলে ধরবেন বলে জানান মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। তৃণমূল সূত্রে খবর, ২২ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলরদের নিয়ে পুরসভায় বৈঠক করেন নান্টুবাবু। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের আধিকারিকের একাংশের সঙ্গে মেয়রের যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। সেই সঙ্গে ‘শিলিগুড়ির কিছু লোক এখনও অশোকবাবুর সঙ্গে রয়েছে’ বলেও মন্তব্য করেন। সে কারণে তাঁরা এখনই অনাস্থা আনছেন না বলে জানান। যা অশোকবাবুর শিবিরকে উৎসাহী করেছে বলে ধারণা তৃণমূল শিবিরের।
যেখানে তৃণমূল স্লোগান তুলেছে অশোকবাবুর সঙ্গে শহরের কোনও মানুষ নেই। পর্যটন মন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, পুজোর পরেই এই পুরবোর্ডের বিসর্জন হবে, সেখানে নান্টুবাবুর মন্তব্যে দলকে বিব্রত হতে হয়েছে, এরই জেরেই নান্টুবাবুকে সরিয়ে দেওয়া হল বলে মনে করা হচ্ছে।