অনুব্রতের পর এ বার সৌমিত্র, থানায় বোমা মারার হুমকি

অনুব্রতের সুরেই এ বার প্রকাশ্যে পুলিশকে হুমকি দিলেন রানিগঞ্জের টিএমসিপি নেতা। তফাৎ শুধু, অনুব্রত মণ্ডলের মতো ভোটের প্রচারে নয়, মঙ্গলবার দুপুরে এই ঘটনার মঞ্চ রানিগঞ্জের টিডিপি কলেজ। অনলাইন ভর্তিতে ছাত্রদের হেনস্থার অভিযোগে এই হুঁশিয়ারি দেন রানিগঞ্জের টিএমসিপি ব্লক সভাপতি সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অন্ডাল শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৫ ২০:৫৫
Share:

সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়।

অনুব্রতের সুরেই এ বার প্রকাশ্যে পুলিশকে হুমকি দিলেন রানিগঞ্জের টিএমসিপি নেতা। তফাৎ শুধু, অনুব্রত মণ্ডলের মতো ভোটের প্রচারে নয়, মঙ্গলবার দুপুরে এই ঘটনার মঞ্চ রানিগঞ্জের টিডিবি কলেজ। অনলাইন ভর্তিতে ছাত্রদের হেনস্থার অভিযোগে এই হুঁশিয়ারি দেন রানিগঞ্জের টিএমসিপি ব্লক সভাপতি সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, অভিযোগ উঠেছে, বোমা মেরে থানা উড়িয়ে দেওয়া-সহ পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানোর মতো উস্কানিমূলক মন্তব্যও করেন তিনি। এমনকী, অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে তাঁকেও ধমক দেন তিনি। ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এর জেরে সৌমিত্রকে এ দিন সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র।

Advertisement

কী ঘটেছিল এ দিন?

কলেজ সূত্রে খবর, রানিগঞ্জ টিডিবি কলেজে অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে গত ১০ জুন। এর পরেও ভর্তির দাবি ছিল টিএমসিপি-র। এতে ছাত্রদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগে এ দিন কলেজে বিক্ষোভ দেখান সৌমিত্র। তাঁর সঙ্গে ছিল এক দল সমর্থক। বিক্ষোভ ছাড়াও সৌমিত্রের নেতৃত্বে কলেজ ঘেরাও করে তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়।

Advertisement

অভিযোগ, সৌমিত্র তাঁর দলবল নিয়ে এর পর কলেজের অধ্যক্ষ স্বদেশকুমার মজুমদারকে ঘেরাও করেন। ধমক দিয়ে অধ্যক্ষের কাছে সৌমিত্র জানতে চান, তিনিই পুলিশ ডেকেছেন কি না। অধ্যক্ষ পুলিশকে ডাকেননি জানালে সেখানে বসেই রানিগঞ্জ থানার ওসি অর্ণব গুহকে ফোন করেন সৌমিত্র। সংবাদমাধ্যমের সামনেই ওসি-কে ধমকাতে থাকেন তিনি। বিক্ষোভ থামাতে পুলিশ সরানোরও দাবি করেন তিনি। তাঁর হুমকি: “পুলিশ না সরালে টেবল ভাঙচুর করব। আমি প্রিন্সিপালকে ঘেরাও করে রেখেছি।” ওসি-কে ধমকানো ছাড়াও দলীয় সমর্থকদের উদ্দেশে এ দিন সৌমিত্র বলেন, “পুলিশকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ওরা সরকারের চাকর। পুলিশ কোনও কিছু করতে পারবে না।” এর পরেই সৌমিত্রের সরাসরি হুমকি: “পাঁচ মিনিটে না সরলে পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগাবো। বোমা মেরে থানা উড়িয়ে দেব।”

এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই সমালোচনায় মুখর হয়েছেন বিরোধী-সহ বিশিষ্টজনেরা। প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী বলেন, “সারা রাজ্যের কলেজে নৈরাজ্য চলছে। টিডিবি কলেজ তার বাইরে নয়।” শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের মতে, “শিক্ষাকে ধ্বংস করার জন্য এ ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।”

আইনের চোখে কতটা গুরুতর সৌমিত্রর মন্তব্য? আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “সৌমিত্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা যেতে পারে।” অবিলম্বে ওই ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করা উচিত বলে দাবি তাঁর।

কী বলছেন সৌমিত্র নিজে? তাঁর হুঁশিয়ারি প্রকাশ্যে আসার পরেও সৌমিত্রের বক্তব্য, এমন কিছুই বলেননি তিনি। আর বিরোধীদের প্রশ্ন, থানায় বোমা মারা বা আগুন লাগানোর মতো মন্তব্যের জেরে যদি সৌমিত্রকে সাসপেন্ড করা হয় তবে পুলিশকে বোমা মারার হুমকি দিয়েও কেন ছাড় পাবেন অনুব্রত?

ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement