বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা।
পাহাড় শুধু না, গোটা রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ তুলে লোকসভায় সরব হলেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। মঙ্গলবার সংসদে দার্জিলিঙের বিভিন্ন ঘটনা উল্লেখ করার সঙ্গে সঙ্গে সাংসদ রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, তৃণমূল নেতাদের নির্দেশ পুলিশ বিরোধীদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে। সরকার, শাসকের বিরুদ্ধে কথা বললে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। মারধর, আগুন দিয়ে বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, হেনস্থা থেকে খুন পর্যন্ত করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য পরিদর্শনের জন্য সংসদীয় টিম পাঠানোর গঠন করার দাবি তুলেছেন রাজু বিস্তা।
তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, রাজ্য তো দূরের কথা, নিজের কেন্দ্রের জন্য কোনও উন্নয়নের কাজ না করে বিস্তা শুধু দিল্লিতে বসে রাজনীতি করে যাচ্ছেন। এমনকি, সংসদীয় এলাকাতেও ওঁকে দেখা যাচ্ছে না। রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী তথা শাসক দলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির চেয়ারম্যান গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘দিল্লিতে লোকসভাকে রাজু বিস্তা অপব্যবহার করছেন। অসত্য, ভিত্তিহীন কথবার্তা বলে রাজনীতি করে যাচ্ছেন। ওঁর এসব মন্তব্য হাস্যকর।’’ মন্ত্রী জানান, পাহাড় থেকে সমতল, উন্নয়নের কত কাজের জায়গা রয়েছে। অথচ সাংসদকে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে সেগুলি জানিয়ে প্রচার করা ছাড়া এখনও অবধি সদর্থক কিছু করতে এলাকার মানুষ দেখল না।
এ দিন সংসদে বক্তব্য রাখতে উঠেও সাংসদ প্রথমে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পুলিশের ভয় ভীতি, আতঙ্কের পরিবেশের তৈরির মত একাধিক অভিযোগ করেন। তার পরেই সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললে বা বিপক্ষে গেলে কী কী করা হচ্ছে, সেগুলি অভিযোগ আকারে স্পিকারের সামনে তুলে ধরেছেন। পরবর্তীতে নিজের সংসদীয় এলাকা নিয়ে অনেক ক্ষণ বক্তব্য রাখেন রাজু বিস্তা। তিনি দাবি করেন, দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার করছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে নিরীহ বাসিন্দাদের। উদাহরণস্বরূপ তিনি জানান, ২৯ নভেম্বর রাতে পুলিশ ১৪ জন মোর্চা কর্মীকে (বিমলপন্থী) গ্রেফতার করে সাদা কাগজে পুলিশ সই করিয়ে নেয়। রাতভর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলে।
দার্জিলিং জেলা পুলিশের অবশ্য দাবি, গ্রেফতারের আগের দিন ওই বিমলপন্থীরা দার্জিলিঙের একটি হলঘরে দীর্ঘ দিন পর জমা হয়ে বৈঠক করেছিল। এদের প্রত্যেকের নামেই ২০১৭ সালের পাহাড়ের গোলমালের একাধিক মামলা রয়েছে। বহুদিন পর প্রকাশ্যে আসতেই তাদের ধরা হয়েছে। আদালতে সব জানানোর পরে আদালতই অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছে।
রাজ্যে গত কয়েক বছরে ১৫০ বিজেপি কর্মী খুন হয়ে হয়ে লোকসভায় সাংসদ জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, তরাই ও ডুয়ার্সের ৫ হাজারের মত যুবক জঙ্গলে লুকিয়ে রয়েছেন।