(বাঁ দিকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কারণে এ বছর স্বাধীনতা দিবসে রাজ্যে কোনও বন্দিকে মুক্তি দেওয়া যাচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিযোগের পাল্টা জবাব দিল রাজভবন। সোমবার রাতে রাজভবন জানাল, নবান্নের সদিচ্ছা অভাবেই বন্দিমুক্তি সম্ভব হয়নি। নবান্নের কাছে এ সংক্রান্ত সাত প্রশ্নের জবাব চাওয়া হয়েছিল। সেই জবাব পাওয়া যায়নি বলেই বন্দিদের মুক্তি দেওয়া সংক্রান্ত ফাইলে রাজ্যপাল সই করেননি বলে জানানো হয়েছে রাজভবনের তরফে।
সোমবার, স্বাধীনতা দিবসের আগের সন্ধ্যায় বেহালায় দলের তরফে আয়োজিত ‘ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট’ কর্মসূচিতে বক্তৃতা করতে গিয়ে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার সেই অভিযোগেরই জবাব দিল রাজভবন। রাজভবন জানিয়েছে, নবান্নের সদিচ্ছার অভাবেই বন্দিমুক্তি সম্ভব হচ্ছে না। রাজভবনের দাবি, বন্দিমুক্তির বিষয়টি নিয়ে নবান্নের কাছ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। এ বিষয়ে কথাও বলতে চেয়েছিলেন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে। নবান্নের তরফে কোনও সহযোগিতা না-পাওয়ায় বন্দিমুক্তির ফাইল অনুমোদন পায়নি।
আনন্দবাজার অনলাইনকে রাজভবনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এ বার মোট ৮৭ জন বন্দির মুক্তির অনুমোদন চেয়ে ফাইল পাঠিয়েছিল নবান্ন। কিন্তু দেখা যায়, সেই তালিকায় এমন ১৬ জন বন্দি রয়েছেন, যাঁরা ভিন্দেশি। সেই বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যের অবস্থান জানতে চাওয়া হয়েছিল। কারণ, ভিন্দেশি বন্দিদের মুক্তির অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যপালের দায়বদ্ধতা রয়েছে। এ বিষয়ে সাত প্রশ্ন সম্বলিত ব্যাখ্যা চাওয়া হলেও নবান্নের তরফ থেকে কোনও জবাব আসেনি বলে রাজভবন সূত্রের দাবি। অনেক অপেক্ষার পর রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব বিপি গোপালিকা ও ডিজি (কারা)-কে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে তলব করেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু, তাঁরা না-আসায় বন্দিমুক্তির ফাইলে অনুমোদন দিতে পারেননি রাজ্যপাল। এমনটাই বক্তব্য রাজভবনের।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিভিন্ন জেলে বন্দিদের আচরণের ভিত্তিতে প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে মুক্তি দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরেই। সেই রীতি মেনেই এ বছর নবান্ন থেকে বন্দিমুক্তির তালিকা পাঠানো হয়েছিল রাজভবনে। নিয়মানুযায়ী, স্বরাষ্ট্র দফতর মারফত বন্দিদের নামের তালিকা পাঠানো হয় রাজ্যপালের অনুমোদনের জন্য। রাজ্যপাল অনুমোদন দিলে সেই ফাইল পাঠানো হয় কারা দফতরে। অনুমোদিত নামের তালিকা দেখে বিভিন্ন জেলের বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয় স্বাধীনতা দিবসে। এ বারও নবান্ন থেকে নামের তালিকা পাঠানো হয়েছিল রাজভবনে। নবান্ন সূত্রে খবর, সেই ফাইলে অনুমোদন দেয়নি রাজভবন। তাই এ বারের স্বাধীনতা দিবসে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বন্দিমুক্তি দিতে পারছে না।