Kolkata Weather Update

কালবৈশাখীতে ভেস্তে যেতে পারে আইপিএলের ম্যাচ? কতটা ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা কলকাতায়? আগামী চার দিনের পূর্বাভাস

হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার থেকেই ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পাশাপাশি বইবে ঝোড়ো হাওয়া। শনিবার কলকাতায় আইপিএলের প্রথম ম্যাচ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫ ১৬:১৭
Share:
Rain and thunderstorm may impact IPL in Kolkata

আগামী শনিবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে কেকেআরের মুখোমুখি হবে আরসিবি। —ফাইল চিত্র।

শনিবার আইপিএলের প্রথম ম্যাচ রয়েছে কলকাতায়। বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ইডেন গার্ডেন্সে খেলতে নামবে অজিঙ্ক রহানের কলকাতা নাইট রাইডার্স। কিন্তু আলিপুর আবহাওয়া দফতর এই ম্যাচ নিয়ে খুব একটা আশার বাণী শোনাতে পারছে না। কারণ আগামী কয়েক দিন কালবৈশাখীর পূর্বাভাস রয়েছে রাজ্য জুড়ে। কলকাতাও তার ব্যতিক্রম নয়।

Advertisement

হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার থেকেই ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পাশাপাশি বইবে ঝোড়ো হাওয়া। ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে বলে সতর্ক করেছেন আবহবিদেরা। বৃষ্টি চলবে শনিবারও। কালবৈশাখী সাধারণত দুপুর বা বিকেলের পর হয়ে থাকে। ইডেনে কেকেআর বনাম আরসিবি ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে। ফলে ঝড়বৃষ্টি হলে ওই সময়ে খেলা ভেস্তেও যেতে পারে। আগামী চার দিনের জন্য বিশেষ বুলেটিন প্রকাশ করেছে হাওয়া অফিস।

বৃহস্পতিবার— ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, হুগলি এবং পূর্ব বর্ধমানে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। হতে পারে শিলাবৃষ্টিও। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে বৃষ্টির সঙ্গে হাওয়ার বেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার।

Advertisement

শুক্রবার— ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর এবং হাওড়াতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মাঝারি বৃষ্টি এবং শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সঙ্গে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। বাকি জেলাগুলিতে হাওয়ার বেগ কিছুটা কম থাকলেও (ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিমি) ঝড়বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

শনিবার— শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত এবং ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা জারি করা হয়েছে শনিবারও। দুর্যোগ চলবে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। বৃষ্টির সঙ্গে এই সমস্ত জেলায় হাওয়ার বেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পাশাপাশি বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।

রবিবার— ঝড়বৃষ্টি চলবে রবিবার পর্যন্ত। তবে ওই দিন দুর্যোগ কিছুটা কম থাকবে। দক্ষিণের সব জেলাতেই রবিবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা। রবিবারের পর থেকে বৃষ্টি কমতে পারে।

বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢুকছে বাংলার উপকূলে। বায়ুপ্রবাহও অনুকূলে রয়েছে। সেই কারণেই ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে রাজ্যে। দক্ষিণের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও দুর্যোগের সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার এবং শনিবার ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝড় এবং বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে দার্জিলিং, কালিম্পং-সহ উত্তরের সব জেলাতেই। ঝড়বৃষ্টি বেশি হবে আলিপুরদুয়ার, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহে।

মৎস্যজীবীদের জন্যেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ২১ মার্চ পর্যন্ত তাঁদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। কালবৈশাখীর পূর্বাভাস জেনে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রেলও। শিয়ালদহ শাখায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে।

  • ঝড় থেকে ওভারহেড তার, ইনসুলেটর এবং ফিটিংসের সুরক্ষার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
  • সিগন্যাল সিস্টেমের তার, রিলে রুম এবং বজ্র প্রতিরক্ষা সিস্টেম নিয়মিত পরীক্ষা করা হবে, যাতে কোথাও কোনও ত্রুটি না থাকে।
  • রেলপথের পাশে নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে লাইন সহজে জলমগ্ন না-হয়ে পড়ে।
  • গাছের যে শাখাগুলি অতিরিক্ত ঝুলে রয়েছে, তা কেটে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে ট্রেন চলাচলে সমস্যা না হয়।
  • সিগন্যালিংয়ের ব্যর্থতা প্রতিরোধে নির্দিষ্ট ডিভাইসগুলি কার্যকর রাখা হচ্ছে।
  • সব স্টেশন এবং কন্ট্রোল রুমে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে জেনারেটরের পরিষেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
  • শক্তিশালী ঝোড়ো হাওয়া বইলে ইএমইউ ট্রেনের গতিতে রাশ টানা হবে।
  • রেলের সমস্ত কর্মীর সুরক্ষা এবং ট্রেন চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
  • যাত্রীরা স্টেশনে ‘পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমের’ মাধ্যমে ঝড়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য জানতে পারবেন।
  • রেলের শিয়ালদহ ডিভিশন আবহাওয়ার পূর্বাভাসের দিকে নজর রাখবে এবং প্রয়োজনে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দল মোতায়েন করবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement