বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের নেতৃত্বে রেল অবরোধ। — নিজস্ব চিত্র।
বুধবার সকালে বন্ধের প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন জেলায়। দিকে দিকে রেল অবরোধ করছেন বিজেপি সমর্থকেরা। স্টেশনে স্টেশনে ট্রেনের ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলে ট্রেন চলাচল বন্ধ করার চেষ্টা করছেন তাঁরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ বন্ধ সমর্থকদের হটাতে শুরু করেছে। দীর্ঘ ক্ষণ ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায় বিপাকে নিত্যযাত্রীরা। তবে বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পুলিশ এসে বন্ধ সমর্থকদের সরিয়ে দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করে। দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনগুলি রওনা দেয় গন্তব্য়ের দিকে।
হুগলি, কাটোয়া, শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখা, মুর্শিদাবাদ, কৃষ্ণনগরে সকালে প্রভাব পড়েছিল ট্রেন চলাচলে। বিভিন্ন লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ে লোকাল ট্রেন। বিজেপির ডাকা বন্ধে সকালেই রেল অবরোধ হুগলি স্টেশনে। ব্যান্ডেল-হাওড়া লোকাল আটকেছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। রেললাইনে শুয়ে পড়েন বিজেপি কর্মীরা।
ব্যারাকপুর স্টেশনেও রেল অবরোধ করছেন বিজেপি কর্মীরা। রেললাইন ধরে হাঁটছেন বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচী। বিজেপির সেই মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়িয়েছে। অন্য দিকে, বন্ধের বিরোধিতায় পথে নেমেছে তৃণমূল। বিজেপির মিছিলকে ধাওয়া করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। রেললাইন ধরে ছুটতে দেখা যায় কৌস্তভকে। পরে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তবে কিছু ক্ষণ পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
মুর্শিদাবাদেও ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিজেপি। প্রথমে জিয়াগঞ্জ স্টেশনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বন্ধ সমর্থকেরা। মুর্শিদাবাদ স্টেশনে জড়ো হতে দেখা যায় বিজেপি কর্মীদের। ডাউন ভাগীরথী এক্সপ্রেস আটকে দেন তাঁরা। বেশ কিছু ক্ষণ মুর্শিদাবাদ স্টেশনে ওই ট্রেন দাঁড়িয়েছিল। পুলিশ এসে অবরোধকারীদের হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান বিজেপির কর্মীরা। তবে শেষে তাঁদের সরিয়ে দিয়ে ভাগীরথী এক্সপ্রেসকে মুর্শিদাবাদ স্টেশন থেকে রওনা করানো হয়। তবে বহরমপুর স্টেশনে আবার সেই এক্সপ্রেসকে আটকান বন্ধ সমর্থকেরা।
রামপুরহাট স্টেশনেও রেল অবরোধ। রামপুরহাট-বর্ধমান প্যাসেঞ্জার ট্রেন আটকে দিল বিজেপি। ট্রেনের সামনে বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। সকালে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয় শিয়ালদহের দক্ষিণ শাখাতেও। লক্ষ্মীকান্তপুর লাইনের একাধিক স্টেশনে ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলেন বন্ধ সমর্থকেরা। যার জেরে রেলের ওভারহেড তারের বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যাহত হয়। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিয়ালদহ থেকে লক্ষ্মীকান্তপুর, কাকদ্বীপ, নামখানাগামী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ট্রেন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় সকাল থেকেই ওই লাইনের একাধিক স্টেশনে ভিড় রেলযাত্রীদের। ট্রেন না পেয়ে অনেকেই সড়কপথে রওনা দিয়েছেন নিজেদের গন্তব্যের উদ্দেশে। ফলে বাস ও অটোতে অতিরিক্ত ভিড়। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তবে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদও জয়নগর স্টেশনের পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।
বনগাঁ, হাওড়া-ব্যান্ডল, কাটোয়াতেও রেল পরিষেবা ব্যাহত। সকাল ছ’টা নাগাদ বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়ার নেতৃত্বে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা আসেন বনগাঁ স্টেশনে। তার পর তারা রেল স্টেশনে অবরোধ করে দেন। শিয়ালদহ-হাসনাবাদ লাইনেও ব্যাহত পরিষেবা। বসিরহাট স্টেশনে ভিড় করেছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা।