বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মূল সিগন্যাল লাল থাকলেও শিয়ালদহ স্টেশনে অনেক সময়েই ‘কলিং অন সিগন্যাল’ দিয়ে ট্রেন চালানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় আনন্দবাজার অনলাইনে। ওই প্রতিবেদনে নিত্যযাত্রী এবং রেলকর্মীদের একাংশের সঙ্গে কথা বলেই শিয়ালদহ স্টেশনে আপৎকালীন সিগন্যাল ব্যবস্থা (কলিং অন সিগন্যাল)-য় নিয়মিত ট্রেন চালানো নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। শুক্রবার রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ‘কলিং অন সিগন্যালে’ ট্রেন চালানোয় যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় না। এ ক্ষেত্রে যাত্রীদের উদ্বেগের কোনও কারণ নেই বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা, হামেশাই ‘কলিং অন সিগন্যাল’ দিয়ে নিয়ন্ত্রিত গতিতে বিভিন্ন ট্রেনকে এগিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। শিয়ালদহের মতো ব্যস্ত স্টেশনে ট্রেন পরিষেবা সর্বদা সচল এবং স্বাভাবিক রাখতে এটি খুব সাধারণ একটি বন্দোবস্ত বলেই দাবি রেলের। এতে কোনও দুর্ঘটনার সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার ‘কলিং অন সিগন্যাল’ দিয়ে ট্রেন চালানো নিয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিকও আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছিলেন, এতে কোনও ঝুঁকির কারণ নেই।
কোনও ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যাওয়ার আগে তাকে নির্দিষ্ট জায়গায় সিগন্যাল দেখানো হয় এগিয়ে যাওয়ার জন্য। রেলের পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘স্টার্টিং সিগন্যাল’। বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছিল, শিয়ালদহ স্টেশনে বহু সময়ই ‘স্টার্টিং সিগন্যাল’ লাল থাকলেও স্রেফ প্ল্যাটফর্ম খালি করে সময়ে ট্রেনগুলিকে গন্তব্যে রওনা করার উদ্দেশে ‘আপৎকালীন সিগন্যাল’ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রেলের পরিভাষায় একে বলা হয় ‘কলিং অন সিগন্যাল’। অর্থাৎ, ট্রেনের চালক (মোটরম্যান) এবং গার্ডকে নির্দিষ্ট বার্তা পাঠিয়ে ধীর গতিতে ট্রেনটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
কলিং অন সিগন্যাল নিয়ে যাত্রীদের সংশয়, কৌতূহল এবং উদ্বেগের দিকটি গুরুত্ব পেয়েছিল আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে। যাত্রীদের অনেকেই জানিয়েছিলেন, ‘কলিং অন সিগন্যালে’ ট্রেনের চাকা গড়ালেও কিছু কিছু দূরে গিয়েই থমকে যাচ্ছে সেটি। রেলের অবশ্য বক্তব্য, কলিং অন সিগন্যালের কারণে ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বড়জোড় ২-৩ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকছে। তার বেশি নয়।
রেলকর্মীদের একাংশ জানিয়েছিলেন, কোনও লাইনে আগে থেকেই ট্রেন দেওয়া থাকলে পরে একই লাইনে এসে পড়া ট্রেনকে ‘কলিং অন সিগন্যাল’ দেওয়া যেতেই পারে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে অবশ্যই দু’টি ট্রেনের মধ্যে ৪৫ মিটারের দূরত্ব থাকতে হবে। কিন্তু শিয়ালদহের মতো ব্যস্ত ডিভিশনে এই বিধি না-মানা হলে ঝুঁকির একটি সম্ভাবনা রয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেছিলেন তাঁরা।
যাত্রীদের আশ্বস্ত করে রেল শুক্রবার জানিয়েছে, কলিং অন সিগন্যালে ট্রেনের চাকা গড়ালেও তাঁদের ঝুঁকির কোনও কারণ নেই।