এর আগেও বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য ব্যবহারের অভিযোগ তিনি তুলেছেন। শুক্রবার ফের সেই অভিযোগ তুলে একাধিক টুইট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে টুইট ‘লাইক’ করেছেন রাহুল গাঁধী। রি-টুইট করেছেন অরবিন্দ কেজরীবাল ও তেজস্বী যাদব।
এ দিন মমতা টুইটে লেখেন, ‘‘বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসা অব্যাহত। কলকাতা থেকে দিল্লি— সর্বত্র বিজেপি এবং তার সহযোগীরা বিরোধীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করছে।’’ এর খানিক পর আবার তাঁর টুইট— ‘‘অখিলেশ যাদব থেকে মায়াবতী, কাউকে ছাড়া হচ্ছে না। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম সর্বত্র বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। ওরা কি ভয় পেয়েছে? ওরা কি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে?’’
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, দেশ জুড়ে বিরোধীদের নিশানা করে সিবিআইয়ের তৎপরতার প্রেক্ষিতেই মমতার এই টুইট। শুক্রবার হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি চালায়। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের ঘনিষ্ঠ একাধিক আধিকারিকের বাড়িতে হানা দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বৃহস্পতিবার রাজ্যের শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ‘ঘনিষ্ঠ’ প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতাকেও গ্রেফতার করে সিবিআই। শুধু মমতা নন, দেশ জুড়ে প্রায় সব বিরোধী নেতাই এ সব ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক ‘চক্রান্ত’ দেখছেন।
এর আগে সিবিআইয়ের দুই অফিসারকে নিয়ে গণ্ডগোল পর্বে সংস্থাটিকে ‘বিবিআই’ বলে টুইট করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। যার অর্থ ‘বিজেপি ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন’।
এ দিন বিহারের আরজেডি নেতা ও লালুপ্রসাদ যাদবের পুত্র তেজস্বী মমতার সেই লাইন ধার করেই টুইট করেন— ‘‘সিবিআই বিবিআই হয়ে গিয়েছে। বিজেপির সঙ্গে হাত মেলালে ক্লিনচিট, রাজা হরিশচন্দ্র। কিন্তু সমালোচনা করলেই পিছনে কেন্দ্রীয় সংস্থা লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমার বাবার সঙ্গেও একই কাজ করা হয়েছে।’’ উল্লেখ্য, ব্রিগেডের সমাবেশে এসেও এ কথাগুলিই বলে গিয়েছিলেন তেজস্বী। অন্য দিকে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের টুইট— ‘‘কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে বিজেপি রাজনৈতিক লড়াই জেতার চেষ্টা করছে। উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ যাদব, মায়াবতী, পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দিল্লিতে আপ— মোদী-শাহ জুটি কাউকে ছাড়ছে না।’’
স্বাভাবিক ভাবেই এ দিন মমতার টুইটের সমালোচনা করেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘দিদি তো সমস্ত দুর্নীতিগ্রস্ত লোকেদের সঙ্গে নিয়েই ঘোরেন। সিবিআইয়ের কাজ চোর ধরা। সিবিআই সে কাজ-ই করছে।’’
তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা অবশ্য বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় শাসক দলের এই প্রতিহিংসার রাজনীতির মোকাবিলা জোটবদ্ধ ভাবেই করবে দেশের বিরোধী দলগুলি। সব নেতারাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়বেন।’’