ভস্মীভূত: হামলার পরে এমনই অবস্থা বাড়ির। মল্লারপুরের গৌরবাজারে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
এনআরসি-র জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, এমন গুজবে ক’দিন ধরেই গোলমাল বাধছিল বীরভূমের নানা প্রান্তে। প্রশাসন বিজ্ঞপ্তি দিয়েও গুজবে রাশ টানতে পারেনি। সেই গুজবের জেরে মল্লারপুর গৌরবাজার গ্রামে এক মহিলার বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাসিন্দাদের একাংশের বিরুদ্ধে।
সূত্রের খবর, ওই মহিলা গ্রামীণ মহিলাদের আধুনিক ইন্টারনেট শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন ‘ইন্টারনেট সাথী’ নামে এক বেসরকারি প্রকল্পের আওতায়। ওই কাজের জন্য তিনি গৌরবাজার ও আশপাশের গ্রামের অনেক মহিলার ছবি তুলেছেন এবং আধার কার্ড-সহ পরিবার সংক্রান্ত কিছু তথ্য নিয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁরা অবশ্য পুলিশে অভিযোগ জানাননি। তাঁদের দাবি, এনআরসি-র জন্য সেই তথ্য নেওয়া হয়েছে।
এনআরসি ঘিরে গুজব যে ক্রমেই ঘোরাল হচ্ছে, তার প্রমাণ সম্প্রতি মিলেছে নলহাটি, মুরারই, পাইকর থানা এলাকায়। বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানান, বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে, এমন প্রয়োজনীয় কর্মসূচি নেওয়ার আগে এলাকায় মাইকিং করে ও লিফলেট ছড়িয়ে মানুষের ভয় দূর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি বা বেসরকারি যে-সব কর্মসূচির সঙ্গে সমীক্ষা জড়িয়ে, সেগুলি আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
গৌরবাজার গ্রামের হাসনেবানু খাতুন গত ডিসেম্বর থেকে ময়ূরেশ্বরের গৌরবাজার, নামোকাঁদা-সহ তিনটি গ্রামে মহিলাদের স্মার্টফোনে নেটের ব্যবহার শেখাচ্ছেন। মঙ্গলবার তাঁর বাড়ি ঘেরাও করেন গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামের দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার, এক জন গ্রামীণ সেখানে পৌঁছে হাসনেবানু ও তাঁর বাবা-মাকে একটি ঘরে রেখে ভিতর থেকে তালা দিয়ে দেন। পুলিশের সামনেও বাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। জখম হন মল্লারপুর থানার এক এসআই। কোনও মতে তিন জনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের সামনেই বাড়িতেও আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ। দমকলের একটি ইঞ্জিন আগুন নেভায়। পুলিশ চার জনকে আটক করেছে।