রবীন্দ্র জন্মোৎসবের সরকারি অনুষ্ঠানে কবীর সুমনের গানে গলা মেলালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চে (বাঁ দিক থেকে) অরূপ বিশ্বাস, সন্ধ্যা রায় এবং দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। শনিবার, ক্যাথিড্রাল রোডে ছবিটি তুলেছেন রণজিৎ নন্দী।
রবীন্দ্র বনাম নরেন্দ্র— টানাপড়েনে কে হাসলেন শেষ হাসিটা ?
পঁচিশে বৈশাখ রবীন্দ্রনাথের ১৫৫তম জন্মদিনে দেখা গেল, বাঙালির কবিগুরুকে তড়িঘড়ি ছেড়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রভাই দামোদরদাস মোদীর কাছেই যেতে বাধ্য হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবীন্দ্র সদন লাগোয়া ক্যাথিড্রাল রোডের মঞ্চ ছেড়ে নজরুল মঞ্চ। এবং এ ভাবে রবীন্দ্রনাথকে ছেড়ে যেতে হচ্ছে বলে আক্ষেপও করে গেলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
শনিবার, বিকেলে সরকারি উদ্যোগে রবীন্দ্রজয়ন্তীর আসরে তাই মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন মাত্র আধ ঘণ্টা।
ক্ষমতায় এসে পঁচিশে বৈশাখ রবীন্দ্র সদনে কবিপ্রণামের অনুষ্ঠানের ছক পাল্টে দিয়েছেন মমতা। আগে রবীন্দ্র সদন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠান হত ভোরবেলায়। মমতা সেই অনুষ্ঠান সরিয়ে আনলেন লাগোয়া রাজপথে। আর সকালের বদলে কবিপ্রণামের লগ্ন নির্দিষ্ট হল বিকেলে। এ যাত্রাও তাই বিকেল চারটেয় শুরু হয়েছিল অনুষ্ঠান।
নিজের পছন্দের প্রাক্-দোল বিচিত্রানুষ্ঠান, পুলিশের বিনোদনী আসর বা বিভিন্ন পুরস্কার প্রদানের সময়ে যেমন দেখা যায়, আগে রবীন্দ্র-জয়ন্তীতেও একই ভাবে রাত পর্যন্ত গান-কবিতায় মেতে থাকতেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে গত বারও লোকসভা ভোট থাকায় পঁচিশে বৈশাখের আসর বুড়ি ছোঁয়া ছুঁয়েই অন্যত্র প্রচারে চলে গিয়েছিলেন মমতা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিবিধ কর্মসূচি থাকায় এ বারও
বাধা পড়ল মুখ্যমন্ত্রীর রবীন্দ্র-বিনোদন উপভোগে।
তাঁর আফশোস, ‘‘অন্যবার সারা দিন বসে থাকি, কিছু শুনব বলে। এ বার অন্য কাজ ফেলে দিয়েছে!’’ বললেন, ‘‘আমার পার্থিব দেহটা অন্য জায়গায় গেলেও মনটা এখানেই পড়ে থাকবে!’’
তবে দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, কবীর সুমন, মোহন সিংহদের গান শুনেছেন মমতা। ‘তুমি কেমন করে গান করো হে গুণী’-র সময়ে সবাইকে গলা মেলাতে ডাক দেন সুমন। তখন দেখা যায়, সহাস্যে সুর ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রীও।
পাশাপাশি, এ দিন শহর জুড়ে ছোট-বড় নানা ধরনের অনুষ্ঠান হয়। সকাল ৭টা থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি চত্বরেও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। পাশাপাশি, এ দিন সকালে ফেসবুক কালার্সের তরফে মেট্রো রেলের ভিতরেও পালন করা হয় রবীন্দ্রজয়ন্তী।