উৎসব দু’ভাগ, ধন্দে চাষিরা

বেড়াবেড়িতে এলাকার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে পাশে নিয়ে হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত ঘোষণা করলেন, এটাই সিঙ্গুর উৎসবের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান। এখানেই মুকুল রায় এসেছেন।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৫০
Share:

বেড়াবেড়িতে এলাকার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে পাশে নিয়ে হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত ঘোষণা করলেন, এটাই সিঙ্গুর উৎসবের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান। এখানেই মুকুল রায় এসেছেন।

Advertisement

৪ কিলোমিটার দূরে, সিঙ্গুর থানার সামনে ধামসা-মাদল নিয়ে বিরাট মিছিল নিয়ে আসছেন হরিপালের বিধায়ক তথা জমি-আন্দোলনের নেতা বেচারাম মান্না। সঙ্গে হুগলির সাংসদ রত্না দে নাগ। সিঙ্গুর উৎসবের এটাই নাকি ‘কেন্দ্রীয়’ মিছিল!

এক উৎসব তবু না হয় দু’ভাগে ভাগ হয়েছে! কিন্তু শুক্রবারের সিঙ্গুরে ধরা পড়ল জমি নিয়ে যে হাজারো ধন্দ, অনেক প্রশ্ন। জমি কী অবস্থায় হাতে পাওয়া যাবে? পেলেও তাতে পুরোদস্তুর ফসল ফলাতে আরও কত দিন লাগবে? টাটারা কি চুপ করে বসেই থাকবে, নাকি তারা ফের আদালতে যাবে? কেউ বলছেন, কাঠামো ভাঙা হলে জমিতে ফের চাষ করবেন। কেউ বা বলছেন, এখানে কারখানা গড়লেই ভাল হয়।

Advertisement

তবে উৎসবেই আপাতত মশগুল সিঙ্গুরবাসী। শাসক দলের এক নেতার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলা সত্ত্বেও যে ভাবে বেচারাম মান্না এবং রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মুখ দেখাদেখি বন্ধ রেখেছেন, তাতে ক্ষতিই হচ্ছে দলের।’’ ওই নেতার মতে, ‘‘এখানকার দলের সমর্থকেরা কিন্তু কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সিঙ্গুর আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। এখন দল শাসক। পরিস্থিতিও পাল্টে গিয়েছে। এই অবস্থায় কর্মীরা দ্বিধায়। রবীন্দ্রনাথবাবু না বেচাদা—কার সঙ্গে পা মেলাবেন, তা নিয়ে।’’ এ দিন অবশ্য বেড়াবেড়ি বাজারে মহাদেব দাসের তত্ত্বাবধানে মঞ্চ বেঁধে সভার আয়োজন করা শাসক দলের নেতারা কিংবা মিছিলে সামিল বেচারামের দলবল—কেউ এ নিয়ে মন্তব্য করেননি। তপনবাবুর দাবি, বেড়াবেড়ির অনুষ্ঠানই দলের মুখ্য কর্মসূচি। সেখানে মুকুলবাবু যখন সিঙ্গুরের ‘আগুন ঝরা’ দিনে বেচারামের ভূমিকা বর্ণনা করছেন, তখন বেচাবাবু ব্যস্ত নিজের উৎসব সফল করতে।

এর মধ্যেই নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খেয়েছে সিঙ্গুরে। তার মধ্যে প্রধান হল, প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে চাষযোগ্য জমি ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু চাষিরা এখনও পর্যন্ত যথেষ্ট দ্বিধাগ্রস্ত রয়েছেন এই প্রশ্নে যে সত্যিই কি ওই জমিতে ফের চাষ সম্ভব হবে? কারণ, ওই জমি কয়েক ফুট বালি ফেলে উচুঁ করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি স্তর পড়েছে রাবিশ, ফ্লাইঅ্যাশ ও স্টোনচিপের। তাই, চাষের জমি চরিত্র হারিয়েছে। এক অনিচ্ছুক চাষি বলেন, “মুখে বলা আর কাজে করা কিন্তু এক নয়। এই জমিকে চাষযোগ্য করা খুবই কঠিন।’’ প্রশাসনের কর্তাদের একাংশও সে কথা মানছেন। ইচ্ছুকদের কেউ কেউ আবার মনে করেন, যে অংশে টাটার ‘শেড’ রয়েছে, সেখানে সরকার বরং অন্য কোনও শিল্প গড়ে তুলুক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement