পাশাপাশি: হলদিয়ায় সে দিন। —নিজস্ব চিত্র।
সে দিন কলকাতায় ছিল বিজেপি-র লালবাজার অভিযান। উত্তপ্ত আবহে এই শহরের রাস্তায় তাঁর মুখে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানে চমকে গিয়েছিলেন অনেকে! লক্ষ্ণণ শেঠের জবাব ছিল, পরিস্থিতি অনুযায়ী সবই পাল্টায়। তত দিনে তিনি লাল থেকে গেরুয়া!
লাল-বাজার ছেড়ে আসার পরে এ বার গেরুয়া শিবিরেই বিতর্ক তমলুকের প্রাক্তন সাংসদকে ঘিরে। কয়েক দিন আগে তাঁর খাস তালুক হলদিয়ায় শ্যামাপ্রসাদ বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে লক্ষ্ণণবাবুর পাশে বসেছিলেন আরএসএসের অখিল ভারতীয় সহ-প্রচারক প্রমুখ অদ্বৈতচরণ দত্ত। তিনি কেন লক্ষ্ণণবাবুর মতো বিতর্কিত নেতার সঙ্গে একমঞ্চে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্নের ঝড় উঠেছে সঙ্ঘ মহলে।
সুতাহাটার সুবর্ণজয়ন্তী হলে ওই অনুষ্ঠানে পাশাপাশি বসেন অদ্বৈত-লক্ষ্ণণ। রাজ্য বিজেপি-তে সঙ্ঘের সাংগঠনিক নিয়ন্ত্রণ রাখতে যে কয়েক জন নেতার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, অদ্বৈতবাবু তার অন্যতম। সিকিম-সহ উত্তরবঙ্গ এবং আন্দামান, ওড়িশা-সহ দক্ষিণবঙ্গ নিয়ে পূর্ব ক্ষেত্র প্রচারক ছিলেন। এখন সর্বভারতীয় স্তরে প্রচারকদের বিষয়ে যুগ্ম দায়িত্বপ্রাপ্ত। তাঁর সঙ্গে লক্ষ্ণণবাবুকে একই মঞ্চে দেখে দুঃখিত সঙ্ঘের নেতা-কর্মীদের একাংশ। তাঁদের কেউ কেউ বলছেন, ‘‘অদ্বৈতদা’র মতো শ্রদ্ধেয় নেতা কেন এমন এক জনের সঙ্গে মঞ্চে থাকবেন, যাঁর হাতে নন্দীগ্রামের রক্ত লেগে আছে?’’ সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে বিতর্ক।
লক্ষ্ণণবাবুর মতো নেতাদের আনলে আদৌ বাংলায় কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হবে কি না, তানিয়ে বিজেপি-র অন্দরেও প্রচুর প্রশ্ন। যদিও কেউ কেউ পাল্টা বলছেন, লক্ষ্ণণবাবুকে দলে নিতে দোষ নেই! তাঁর সঙ্গে অনুষ্ঠানে গেলে দোষ কী? লক্ষ্ণণবাবুর পুরনো দলের নেতা বিমান বসু ঘটনার কথা শুনে বলছেন, ‘‘লক্ষ্ণণকে তো ওরা নিয়েই নিয়েছে! এখন আর কী হবে!’’ লক্ষ্ণণবাবুর বক্তব্য জানা যায়নি। বিভিন্ন নম্বরে এবং সহকারী মারফতও রবিবার যোগাযোগ করা যায়নি তাঁর সঙ্গে। আর অদ্বৈতবাবু বলেছেন, তিনি কিছু বলতে চান না।