প্রতীকী ছবি।
উপকূল বিধি ভেঙে গজিয়ে ওঠা অনেক হোটেলের ঘাড়েই আইনের খাঁড়া ঝুলছিল। কেননা সুন্দরবনের দূষণ নিয়ে নিজের থেকে মামলা করেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার তারাই সেই মামলার শুনানি অনির্দিষ্ট কালের জন্য মুলতুবি করে দিয়েছে।
এ দিন শুনানিতে রাজ্য সরকারের কৌঁসুলি বিকাশ করগুপ্ত ওই আদালতে জানান, দিল্লিতে জাতীয় পরিবেশ আদালতের প্রধান বেঞ্চে এই ধরনের একটি মামলা চলছে। তা শুনেই বিচারপতি এস পি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, দিল্লির মামলাটির ফয়সালার আগে আর এই মামলার শুনানি হবে না।
শুনানি স্থগিত হয়ে যাওয়ায় পরিবেশকর্মী ও হোটেল-মালিক, দু’পক্ষে দু’রকম প্রতিক্রিয়া হয়েছে। পরিবেশকর্মীদের আশঙ্কা, মামলার কাজ বন্ধ থাকায় এখনকার বিভিন্ন হোটেল দূষণ-বিধির তোয়াক্কা না-করে বেপরোয়া ভাবে কাজ চালাবে। সেই সঙ্গে বেআইনি ভাবে গড়ে উঠবে আরও অনেক হোটেল। মামলা চলতে পারে সুদীর্ঘ কাল। দূষণের দাপট রুখবে কে? হোটেল-মালিকেরা অবশ্য মনে করছেন, কিছুটা হাঁপ ছাড়ার সুযোগ মিলল। আদালতের স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় ক্ষতির আশঙ্কা করছিলেন তাঁরা। শুনানি স্থগিতের ফলে সেই ফাঁড়া আপাতত কাটল বলে মনে করছেন হোটেল-মালিকদের আইনজীবীরাও।
সুন্দরবনের হোটেল-মালিক সংগঠনের আইনজীবী অনুপম মুখোপাধ্যায় জানান, দূষণের অভিযোগের ভিত্তিতে আদালত তাঁর মক্কেলদের জবাব তলব করেছিল। তাঁরা উত্তরও দিয়েছিলেন। সেই উত্তর পাওয়ার পরে আদালতের নির্দেশ দেওয়ার কথা ছিল। তার আগে শুনানি মুলতুবি হয়ে যাওয়ায় তাঁর মক্কেলরা আপাতত স্বস্তিতে।
সুন্দরবনের হোটেল-মালিক সংগঠনের সহ-সভাপতি প্রবীর সিংহরায় বলেন, ‘‘আমরা পরিবেশ রক্ষা করে ব্যবসা করতে চাই।’’ তিনি জানান, কিছু হোটেলের কাগজপত্র নিয়ে সমস্যা থাকতে পারে। তাই কী ভাবে পরিবেশ বিধি মেনে হোটেল চালানো যায়, তার উপরে জোর দেওয়া হবে। হোটেলগুলি যাতে সব রকমের ছাড়পত্র নিয়ে ব্যবসা করতে পারে, তার জন্য রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা।
সমস্যা শুধু বেআইনি হোটেলে নয়। সুন্দরবনে দূষণের অভিযোগে একটি সংস্থার দু’টি প্রমোদতরী ভ্রাম্যমাণ থাকা অবস্থায় পরিদর্শন করতে বলা হয়েছিল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে। পর্ষদের আইনজীবী অর্পিতা চৌধুরী এ দিন আদালতে জানান, প্রমোদতরীর পরিষেবা সেপ্টেম্বরের আগে চালু হবে না। তাই ভ্রাম্যমাণ অবস্থায় পরিদর্শন হয়নি।