স্বপন ‘পাগল’, ফের বেফাঁস অনুব্রত

দলীয় বিধায়ককেই ‘পাগল’ সম্বোধন করে নয়া বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল! শুক্রবার রামপুরহাটের রক্তকরবী পুরমঞ্চে একটি দলীয় কর্মিসভায় যোগ দিতে এসেছিলেন অনুব্রত। উদ্দেশ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসন্ন প্রশাসনিক সভার আগে দলীয় স্তরে প্রস্তুতি সেরে রাখা। সেখান থেকে রামপুরহাট হাইস্কুলে সভার মাঠ দেখতে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সিউড়ির বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষকে লক্ষ্য করে ফের বেফাঁস মন্তব্য করে বেসেন শাসকদলের ওই দাপুটে নেতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:২২
Share:

এক মঞ্চে। শুক্রবার সব্যসাচী ইসলামের তোলা ছবি।

দলীয় বিধায়ককেই ‘পাগল’ সম্বোধন করে নয়া বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল!

Advertisement

শুক্রবার রামপুরহাটের রক্তকরবী পুরমঞ্চে একটি দলীয় কর্মিসভায় যোগ দিতে এসেছিলেন অনুব্রত। উদ্দেশ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসন্ন প্রশাসনিক সভার আগে দলীয় স্তরে প্রস্তুতি সেরে রাখা। সেখান থেকে রামপুরহাট হাইস্কুলে সভার মাঠ দেখতে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সিউড়ির বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষকে লক্ষ্য করে ফের বেফাঁস মন্তব্য করে বেসেন শাসকদলের ওই দাপুটে নেতা। ইদানিং স্বপনবাবুর সঙ্গে দলের জেলা নেতৃত্বের দূরত্ব বাড়ছে। বেশ কিছু দিন ধরে ওই তৃণমূল বিধায়ক দলীয় কর্মসূচি এড়িয়ে চলছেন বলে খবর। দলের নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে। এ নিয়েই প্রশ্ন করা হলে অনুব্রত দৃশ্যতই উত্যক্ত হয়ে বলে ওঠেন, “পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়!”

অনুব্রতর ওই মন্তব্যের কথা প্রকাশ্যে আসতেই জোর জল্পনা শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে। দলের বিধায়ককে এ ভাবে সরাসরি ‘পাগল’ সম্বোধন করা নিয়ে দলের একাংশেই আপত্তি ওঠে। সিউড়ি শহরেরই এক তৃণমূল নেতা বলেন, “দলের মধ্যে মতান্তর থাকতেই পারে। তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু, তা বলে বাইরের লোকেদের সামনে দলের বিধায়ককে এ রকম সম্বোধন সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত।” অনুব্রত যখন ও কথা বলছেন, তাঁর ঠিক পাশেই ছিলেন রামপুরহাটের বিধায়ক তথা রাজ্যের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতার ওই কথায় অস্বস্তি ধরা পড়েছে তাঁর প্রতিক্রিয়াতেই। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলেই ‘আমি ফোনে ব্যস্ত ছিলাম। আমি কিছু শুনিনি’ বলে প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন আশিসবাবু। এমনকী, ‘ভুল’ বুঝতে পেরে খানিক পরেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া চেষ্টা করেন অনুব্রত নিজেও। তাঁর দাবি, “বিধায়ক পাগল, আমি সে কথা বলিনি। আমি শুধু একটা প্রবাদের কথা বলেছি মাত্র!”

Advertisement

নেতারা প্রকাশ্যে অনুব্রতর ওই বক্তব্যের সমালোচনা করতে না পারলেও এই সুযোগ হাতছাড়া করেনি বিজেপি। রামপুরহাটেরই বাসিন্দা তথা বিজেপি-র জেলা সহ-সভাপতি শুভাশিস চৌধুরীর বক্তব্য, “দুর্নীতি আর অরাজকতায় জড়িয়ে তৃণমূল দলটার কেমন টালমাটাল অবস্থা, তা অনুব্রতর বক্তব্যেই পরিষ্কার হয়েছে। তা না হলে, নিজেরই দলের বিধায়ককে কেউ পাগল বলে!” এ দিকে, বহু বার চেষ্টা করেও এ নিয়ে স্বপনবাবুর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

অন্য দিকে, জেলায় তৃণমূল কতটা বিজেপি ‘জুজু’তে আক্রান্ত তা এ দিন রামপুরহাটের কর্মিসভায় নেতাদের বক্তব্যেই স্পষ্ট হয়েছে। লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আমরা এখন কঠিন পরীক্ষার সামনে উপস্থিত। আপনাদের সেই কঠিন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় উপস্থিত থেকে দেখাতে হবে বীরভূম জেলার মানুষ তাঁরই পাশে আছেন।” আবার আশিসবাবু বলেন, “সভায় এত বেশি লোক আনতে হবে, যাতে কলকাতা পর্যন্ত জানতে পারে বীরভূমের মানুষ যাবতীয় কুৎসা অপপ্রচারের জবাব দিয়েছেন।” অন্য দিকে, জেলা তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী হুঙ্কার দিয়ে জানিয়ে দেন, “আগামী ১০ জানুয়ারির সভার উপস্থিতিই জানিয়ে দেবে, বীরভূমে একটাই দল আছে। সেটা তৃণমূল। এই কথা ভেবে ১০ তারিখ জনসভায় লোক নিয়ে আসবেন।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement