বহু আবেদনেও নেয়নি প্রশাসন

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য জমি দিতে চান যুবক

জমি আছে। কিন্তু তা নিতে প্রশাসনোরই কোনও উদ্যোগ নেই! বছরভর দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী তারাপীঠে ভিড় করেন। কিন্তু তারাপীঠ ও লাগোয়া আটলা-কবিচন্দ্রপুরের মানুষের জন্য এলাকায় কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০২:৫৯
Share:

নিজের এই জমিটিই দান করতে চান বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

জমি আছে। কিন্তু তা নিতে প্রশাসনোরই কোনও উদ্যোগ নেই!

Advertisement

বছরভর দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী তারাপীঠে ভিড় করেন। কিন্তু তারাপীঠ ও লাগোয়া আটলা-কবিচন্দ্রপুরের মানুষের জন্য এলাকায় কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। তাই একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়া হোক জানিয়ে নিজের জমিটি দিতে চেয়েছিলেন তারাপীঠের বাসিন্দা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু, তাঁর ক্ষোভ, জেলা প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এ নিয়ে একাধিক বার আবেদন জানিয়েও কোনও ফল মেলেনি। প্রশাসনের তরফে জমি নিতে কোনও উদ্যোগ না দেখে হতাশ বিপ্লববাবু। জমি দেওয়ার কথা জানিয়ে ফের তিনি রাজ্য প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে চিঠি দিলেন।

পেশায় তারাপীঠ মন্দিরের সেবাইত বিপ্লববাবু তারাপীঠ মন্দিরে কাজ করতে গিয়ে চোখের সামনে অনেক দুর্ঘটনা ঘটতে দেখেছেন। দুর্ঘটনায় প্রাণহানির মতো ঘটনার সাক্ষীও থাকতে হয়েছে তাঁকে! কার্যত এ সব দেখে-শুনেই এলাকায় একটি হাসপাতালের জন্য জমি দিতে আগ্রহ দেখান বিপ্লববাবু।

Advertisement

বিপ্লববাবু বর্তমানে স্থানীয় সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের উপপ্রধান। জমি দিতে চেয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং জেলা প্রশাসনের কাছেও চিঠি দিয়েছেন। বুধবার রামপুরহাট মহকুমাশাসকের কাছে তাঁর আবেদনপত্র জমা পড়ে। এর আগে বেশ কয়েকবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রীর কাছেও তাঁর আবেদন পৌঁছে দিয়েছেন বিপ্লববাবু। কিন্তু কোনও দফতর থেকেই এখনও পর্যন্ত কোনও ইঙ্গিত না মেলার জন্য হতাশ হয়ে তিনি পুনরায় জেলা প্রশাসনের সমস্ত স্তরে তাঁর আবেদন পত্র পাঠান।

কী বলছেন বিপ্লববাবু?

“বাবা মা কেউ নেই। সাত বছর আগে তারাপীঠের রাস্তার ধারে আটলা মৌজায় দু’ বিঘে সাত কাঠা জায়গা কিনেছিলাম। সেই জায়গার মধ্যে পাঁচ কাঠা জায়গা তারাপীঠ এলাকায় একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরির জন্য স্বেচ্ছায় সরকারকে দান করতে চাই। সে কথা বার বার সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানিয়েও কোনও উদ্যোগ দেখছি না।” ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য নিজের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন বিপ্লববাবু। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দু’জন চিকিত্‌সক, দু’জন নার্স থাকবেন। এবং এলাকার দুঃস্থ মানুষেরা সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনা পয়সায় পরিষেবা পাবে, এমনটাই চান তিনি।

এলাকার বাসিন্দা সাহেব সাহা, তারাপীঠ তারামাতা সেবাইত সমিতির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায়রা বলেন, “ভালো উদ্যোগ। তারাপীঠে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রয়োজন আছে।” তাঁদের দাবি, যে এলাকায় বিপ্লববাবু স্বেচ্ছায় পাঁচ কাঠা জমি দান করতে চাইছেন, সেই এলাকায় জমির দাম কমপক্ষে বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী তিন থেকে চার লক্ষ টাকা দামে এক কাঠা জমি বিক্রি হচ্ছে। সেই জন্য রাস্তার ধারে এমন সুন্দর জায়গা স্বেচ্ছায় মিললে সরকারের এ ব্যপারে এগিয়ে আসা উচিত।

রামপুরহাট মহকুমাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “তারাপীঠে দৈনিক প্রচুর লোকের সমাগম ঘটে। সেজন্য তারাপীঠে একটা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রয়োজন আছে। বিপ্লববাবু মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রশাসনের সর্বস্তরে আবেদন করেছেন। বিষয়টি জেলাশাসককে জানিয়েছি।” জেলাশাসক পি মোহন গাঁধি বলেন, “তারাপীঠে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রয়োজন আছে। স্বেচ্ছায় জমি দানের জন্য কেউ যদি আবেদন করে থাকেন, তাহলে বিশেষ নজর দিয়ে দেখা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement