ক্লাস হল না হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজে।
আগে থেকে কোনও সিদ্ধান্ত ছিল না। অথচ কলেজের গেটে কয়েকটি পোস্টার সেঁটে এবং তালা ঝুলিয়ে শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিলেন শিক্ষার্থীরা। দুবরাজপুরের হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজের ঘটনা।
ওই পোস্টারে দাবি করা হয়েছে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দিয়ে কলেজ চালানো যাবে না। কলেজে হয় স্থায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগ করতে হবে, নতুবা বর্তমান অধ্যক্ষের অবসরের পর তাঁকেই ওই কলেজে পুনর্বহাল করতে হবে। কিন্তু হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ আগামী ৩০ নভেম্বর অবসর গ্রহণের আগে কলেজের শিক্ষার্থীরা কেন এ কাজ করলেন সেটা স্পষ্ট নয়। অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘটের পরিণতি কী হবে, এত ছাত্রছাত্রীর ক্লাস বন্ধ হলে তার কী প্রভাব পড়বে স্পষ্ট নয় সেটাও। তবে বাস্তব চিত্রটা হল শুক্রবার কলেজের পঠন-পাঠন পুরোপুরি বন্ধ থাকল। এ দিন অনেক পড়ুয়া কলেজে এসেও বন্ধ গেট ও সাঁটা পোস্টার দেখে ফিরে গেলেন। বাইরেই দাড়িয়ে থাকতে হল কলেজের অধ্যক্ষ থেকে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের। এ দিন কলেজের বাইরে অপেক্ষমান অধ্যক্ষ সমীরকুমার গঙ্গোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করা হল, আপনি কলেজের তালা খোলালেন না কেন? কেনই বা পুলিশে খবর দিলেন না? এই প্রশ্নের উত্তরে সমীরবাবু বলেন, “কোন ছাত্র-ছাত্রীরা এ কাজ করেছে সেটা স্পষ্ট নয়। তবে বল প্রয়োগ করে এ কাজ করলে যদি শিক্ষার্থীদের ভাবাবেগে আঘাত পায় তাই জোর করিনি। আজ, শনিবার কলেজে পরিচালন সমিতির বৈঠক আছে। এই কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি যেহেতু মাননীয় স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। তাই সেখানে আলোচনা সাপেক্ষে যা সিদ্ধান্ত হয় নেব।”
এ ক্ষত্রে একটা প্রশ্ন থাকছে, অধ্যক্ষ অবসর নেওয়ার আগে এমন কাজ কারা করলেন। এ দিন যাঁরা কলেজ থেকে ফিরেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের একটা অংশ বলছেন, “এ কাজের পিছনে রয়েছে বর্তমানে কলেজ সংসদে ক্ষামতাসীন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। কারণ, এ ভাবে কলেজ বন্ধ করে কারও লাভ হয় না।” যদিও এমন অভিযোগ মানতে নারাজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অভিনিবেশ রায়। তাঁর দাবি, “ছাত্রসংসদ কোনও ভাবে এতে জড়ায়নি। এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশেরই। এই কলেজে নিয়মিত পড়ুয়ার সংখ্যা ২৭০০। তাই কিছু ছাত্রছাত্রী ভিন্ন মত পোষণ করতেই পারেন। তবে যেহেতু এটা কলেজের ভবিষ্যত্, উন্নয়ন এবং ভালমন্দের সমস্যা তাই এই দাবির সমর্থনে সংসদ দাঁড়াতেই পারে।” অধ্যক্ষ সমীর গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, “ছাত্রদের এমন দাবিতে আমি সম্মানিত। কিন্তু অবসরের পর কাজ করার ইচ্ছে আমার নেই। পরিচালন কমিটির সিদ্ধান্ত ওদের মেনে নিতেই হবে এবং এতেই ওদের ভাল।”