পারিবারিক অশান্তির জেরে স্ত্রীকে অ্যাসিড ছুড়ে আহত করার দায়ে ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বোলপুরের অতিরিক্ত জেলা জজের আদালত। বোলপুরের অতিরিক্ত জেলা জজ সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরী এই নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি গভীর রাতে বাড়িতে অনধিকার প্রবেশের দায়ে এক বছর কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও দু’মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার এই মামলায় অভিযুক্ত সঞ্জয় পালকে বিচারক দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। সাজা ঘোষণার আগে স্ত্রীকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন জজ। বিচারকের সেই নির্দেশে কৃষ্ণাদেবী শুক্রবার আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন। দোষী ব্যক্তির সঙ্গে তিনি আর ঘর বসাতে চান না, সে কথা কৃষ্ণাদেবী বিচারককে জানান। তার পরেই সাজা ঘোষণা হয়।
সরকারী পক্ষের আইনজীবী তপনকুমার দে বলেন, “২০১১ সালের ২৪ অক্টোবর মাঝ রাতের ঘটনা। ওই দিন বাপেরবাড়ি বোলপুর থানার গোপালপুর গ্রামে ছিলেন কৃষ্ণাদেবী। আচমকা নানুর থানার ব্রাহ্মণখণ্ডের বাসিন্দা সঞ্জয় পাল শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে পড়েন। কেউ কিছু বোঝার আগেই ঘরের জানালা দিয়ে স্ত্রীর উপর অ্যাসিড ছুড়ে দেয় সঞ্জয়। তখন মশারির ভিতরে ঘুমোচ্ছিলেন কৃষ্ণাদেবী, মেয়ে মঞ্জরি ও মা উন্নতি মণ্ডল। অ্যাসিডে তিন জনই জখম হন। এর পরেই দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় সঞ্জয়। পরের দিন আহত কৃষ্ণাদেবীর কাকা গৌর মোহন মণ্ডল বোলপুর থানায় জামাইয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ, ধারালো অস্ত্র বা অ্যাসিড জাতীয় কিছু দিয়ে আঘাত করা এবং খুনের চেষ্টা এই সব ধারায় মামলা রুজু করে। ২৬ অক্টোবর নানুরের ব্রাহ্মণখণ্ড বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত সঞ্জয়কে। ২০১২ সালের ২১ জানুয়ারি অভিযুক্ত জামিনে ছাড়া পায়। ওই বছর ৯ জুলাই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বোলপুর পুলিশ। স্ত্রী, শাশুড়ি-সহ মোট ১২ জনের সাক্ষ্য নেয় আদালত। চিকিৎসকের রিপোর্টে আহতদের ক্ষত গুরুতর না থাকার কারণে খুনের চেষ্টার অভিযোগ থেকে নিস্তার পায় সঞ্জয়। আইনজীবী তপনবাবু বলেন, “বুধবার বোলপুরের অতিরক্ত জেলা জজ সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরী সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করেন। শুক্রবার সাজা ঘোষণা করা করেন বিচারক। জরিমানার ২০ হাজার টাকা শিশুকন্যা মঞ্জরিকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।”