ফের স্কুলে ঢুকে পাঁচ লক্ষ টাকার কম্পিউটার এবং আনুষঙ্কিক নানা উপকরণ চুরি করল দুষ্কৃতীরা। এ বারের ঘটনাটি ঘটেছে বোলপুরের বিনুরিয়ার নীরদবরণী উচ্চ বিদ্যালয়ে। শুক্রবার সকালে স্কুল খুলতে চুরির বিষয়টি জানাজানি হয়। তার পরেই পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্কুল সূত্রের খবর, আর পাঁচটা দিনের মতো বৃহস্পতিবারও পঠনপাঠনের পরে স্কুলে ছুটি হয়। স্কুলের এক জন নৈশপ্রহরী রয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে তিনি ছিলেন না। বাবা মারা যাওয়ায় শেখ সমীর আলি নামে ওই নৈশপ্রহরী বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাঁরই অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে ওই চুরি হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে। শুক্রবার সকালে স্কুল খুলতে ভাঙা তালা দেখেই চুরির বিষয়টি ধরা পড়ে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মানিকচন্দ্র ঘোষ বলেন, “স্কুলের কম্পিউটার রুমের কোলাপসিবল গেট এবং আরও একটি দরজার তালা ভেঙে চুরি হয়েছে। ১১টি মনিটার, ১১টি সিপিইউ, একটি প্রোজেক্টর, প্রিন্টার-সহ আনুমানিক পাঁচ লক্ষ টাকার জিনিস চুরি গিয়েছে।” স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক শেখ আকবর আলি জানান, এ নিয়ে পরিচালন সমিতির একটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। গোটা বিষয়টি লিখিত ভাবে পুলিশে জানানো হয়েছে।
জেলায় স্কুল থেকে কম্পিউটার চুরি অবশ্য নতুন নয়। মাসখানেক ধরেই বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কয়েকটি স্কুলে একই কাণ্ড ঘটেছে। তার মধ্যে বোলপুর মহকুমারই একাধিক স্কুল রয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর ইলামবাজার থানা এলাকার দ্বারোন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার রুম থেকে সর্বস্ব চুরি যায়। তার কয়েক দিনের মধ্যেই ১৯ ডিসেম্বর বোলপুরের আদিত্যপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার চুরি গিয়েছিল। শেষ চুরি হয়েছিল সিউড়ির আড্ডা গ্রামে সত্যপ্রসন্ন পাবলিক হাইস্কুলে। তবে, কোনও ক্ষেত্রেই পুলিশ এক জনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। উদ্ধার হয়নি চুরি যাওয়া সামগ্রিও। পর পর স্কুলে এই চুরির ঘটনা মনে পড়িয়ে দিচ্ছে কয়েক বছর আগে জেলায় একের পর এক মন্দিরে চুরির ঘটনা। স্কুলে কম্পিউটার চুরির পিছনে বিশেষ কোনও গ্যাং সক্রিয় কিনা, এ নিয়ে জেলা পুলিশের কর্তারা অবশ্য এখনই মুখ খুলতে নারাজ। তাঁরা সব রকমের সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখছেন। তবে, জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “বীরভূম, মালদহ-সহ বিভিন্ন জেলার স্কুল থেকে কম্পিউটার চুরির খবর রয়েছে। এর পিছনে কোনও বিশেষ চক্র সক্রিয় কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যে সব স্কুলে কম্পিউটার রয়েছে, সেখানে আমাদের নজরদারি রয়েছে।”