রাস্তা সংস্কারে দলাদলি বান্দোয়ানে

দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা ভেঙে পড়ে রয়েছে। কিন্তু সেই রাস্তা সংস্কারে আগ্রহ নেই প্রশাসনের। এমনটাই অভিযোগ একসময়কার মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা বান্দোয়ানের মানুষজনের। মানবাজারের দিক দিয়ে বান্দোয়ান বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার রাস্তা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। আর এই রাস্তার উপরে কিছু রায়তি জমি পড়ায় সংস্কার করা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ফলে রাস্তার বেহাল অবস্থা নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ালেও কবে ওই রাস্তা সংস্কার করা হবে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তার সদুত্তর মেলেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৪ ০১:০৮
Share:

ঝুঁকির পথ। বান্দোয়ান বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।

দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা ভেঙে পড়ে রয়েছে। কিন্তু সেই রাস্তা সংস্কারে আগ্রহ নেই প্রশাসনের। এমনটাই অভিযোগ একসময়কার মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা বান্দোয়ানের মানুষজনের। মানবাজারের দিক দিয়ে বান্দোয়ান বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার রাস্তা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। আর এই রাস্তার উপরে কিছু রায়তি জমি পড়ায় সংস্কার করা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ফলে রাস্তার বেহাল অবস্থা নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ালেও কবে ওই রাস্তা সংস্কার করা হবে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তার সদুত্তর মেলেনি।

Advertisement

বান্দোয়ান বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার দু’টি রাস্তা রয়েছে, একটি কুইলাপালের দিক থেকে, অন্যটি মানবাজারের দিক থেকে ঢুকেছে। দু’টি রাস্তার অবস্থায় শোচনীয়। বাসিন্দাদের দাবি, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় রাস্তার উপর থেকে পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বাসগুলি ওই রাস্তা দিয়ে যে ভাবে হেলতে-দুলতে যায়, যে কোনও সময় গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনায় আশঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা। পাছে বাস গায়ের উপর উল্টে পড়ে, এই ভয়ে অনেকে বাসস্ট্যান্ডে ঢুকছেন না। বান্দোয়ানের বাসিন্দা মহম্মদ আকিল, সুদেব মাহাতো বলেন, “রাস্তাটি এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছে যে আমরা বাস ধরতে আর বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছি না। বাজারেই বাসের অপেক্ষা করি।”

রাস্তাটি কেন সংস্কার করা হচ্ছে না? এ নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে জলঘোলা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের একাংশ দাবি করেছেন, ওই রাস্তাটি বামফ্রন্টের আমলে কিছু রায়তি জমির উপরেই তৈরি করা হয়েছিল। তাতেই আপত্তি তুলেছেন ব্লক তৃণমূলের একাংশ। সিপিএম নেতৃত্ব একটি চিঠি তুলে ধরে দাবি করেছেন, তৃণমূলের বান্দোয়ান ব্লক সভাপতি থাকার সময়ে রঘুনাথ মাঝি ৪ মে বিডিওকে ওই চিঠি দিয়ে রাস্তা সংস্কারের কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন। ব্লক তৃণমূল সভাপতির নিজস্ব প্যাডে বিডিও-কে উদ্দেশ্য করে লেখা ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘দলীয় মিটিংয়ে আসন্ন লোকসভা নির্বাচন ও বান্দোয়ান বাসস্ট্যান্ডের রাস্তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় উঠে আসে যে জমি মালিকদের অনুমতি না নিয়ে বামফ্রন্ট সরকার পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে বান্দোয়ান বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার রাস্তা তৈরি করেছিল। উক্ত বাসস্ট্যান্ড-সহ রাস্তার উন্নয়নমূলক কাজ যাতে স্থগিত থাকে, বিষয়টি আপনার অবগতির জন্য জানানো হল।’ চিঠির নীচে বান্দোয়ান ব্লক তৃণমূল সভাপতি রঘুনাথ মাঝির সাক্ষর রয়েছে।

Advertisement

ওই চিঠি দেখিয়ে বান্দোয়ানের সিপিএম বিধায়ক সুশান্ত বেসরার কটাক্ষ, “তৃণমূল যে উন্নয়ন বিরোধী, এই চিঠিই তার প্রমাণ।” যদিও রঘুনাথবাবু বিডিওকে ওই চিঠি দেওয়ার কথা অস্বীকার করে পাল্টা প্রশ্ন করেছেন, “এ ধরনের চিঠি কি আমি লিখতে পারি! আমরা কি অত বোকা যে বিডিওকে উন্নয়ন স্থগিত রাখার অনুরোধ করব?” তাঁর দাবি, সিপিএম পরিকল্পিতভাবে তৃণমূলকে হেয় করতে ওই মিথ্যা চিঠির গল্প ছড়িয়ে রটাচ্ছে।” বান্দোয়ানের বিডিও মধুসূদন মণ্ডল-ও তৃণমূল নেতৃত্বের কাছ থেকে এ ধরনের চিঠি পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার রাস্তা একেবারেই বেহাল হয়ে পড়েছে। কিন্তু রাস্তাটি সংস্কারের খরচ একা পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষে বহণ করা সম্ভব নয়। এ ছাড়া ওই রাস্তার অনেকটা রায়তি জমির মধ্যে পড়ে। আগে কী ভাবে ওই রাস্তা হয়েছিল আমরা জানি না। ওই রাস্তা সংক্রান্ত কোনও নথি পঞ্চায়েত সমিতিতে নেই। এখন সংস্কার করতে গেলে আইনি ঝামেলায় জড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”

এ দিকে, বিধায়ক দাবি করেছেন, বান্দোয়ানের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ কর জেলা পরিষদের সভাধিপতি থাকাকালীন এই বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করেছিলেন। তারপরে দু’বার রাস্তা সংস্কার করা হয়েছিল। রাস্তা তৈরি করা বা সংস্কারের সময় কেউ কোনও আপত্তি তোলেননি। তা হলে এখন অজুহাত খোঁজা হচ্ছে কেন?” বিডিও বলেন, “ওই রাস্তার মধ্যে থাকা রায়তি জমির মালিকদের কাছ থেকে সাধারনের ব্যবহারের জন্য তাঁদের আপত্তি নেই বলে মুচলেকা পত্র এবং রাস্তা সংস্কারের টাকার জোগান পেলেই কাজ শুরু করা সম্ভব।”

ঝালদায় চুরি। চুরির ঘটনা ঘটল ঝালদা পুরশহরের এক কাউন্সিলরের বাড়িতে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাত্রে ঝালদার আনন্দবাজার এলাকায়। এই এলাকাতেই বাড়ি পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অন্নপূর্ণা দাসের। তিনি ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে জিতেছিলেন। তাঁর স্বামী অরূপ দাস জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তিনি স্ত্রীকে নিয়ে পুরুলিয়া শহরে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন। রাতে বাড়ি ফেরেননি। পুরুলিয়া শহরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে তাঁরা ছিলেন। শুক্রবার সকালে পরিচারিকা তাঁদের বাড়িতে দিয়ে দেখেন দরজার তালা ভাঙা। তাঁর কাছে থেকে খবর পেয়েই দ্রুত ঝালদায় ফিরে যান ওই দম্পতি। গিয়ে দেখেন দরজার একাধিক তালা ভেঙে এবং ঘরের আলমারি ভেঙে দুষ্কৃতীরা টাকা, গয়না, এটিএম কার্ড হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement