পুরুলিয়ায় রেলের বিভিন্ন প্রকল্পগুলি রূপায়ণে ব্যর্থতার দায় কংগ্রেসের উপরেই চাপালেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা মুকুল রায়। কাশীপুরে নির্বাচনী প্রচারে এসে আদ্রায় রেল-এনটিপিসি যৌথ উদ্যোগের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজের অগ্রগতি না হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে মুকুলবাবু বলেন, “আড়াই বছর ধরে রেলমন্ত্রক রয়েছে কংগ্রেসের হাতে। কিন্তু, আদ্রায় রেলের বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজের এক ইঞ্চিও অগ্রগতি হয়নি।” কিছুদিন আগে কাশীপুরেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী রেলের প্রকল্পগুলি রূপায়ণে ব্যর্থতার জন্য তৃণমূলকে দুষেছিলেন।
কাশীপুরের যে সেবাব্রতী সঙ্ঘের মাঠে এ দিন সভা করেছেন মুকুলবাবু, সেখানেই প্রথমে সভা করেছিল কংগ্রেস। পরে সভা করে বামফ্রন্ট। সে কথা মাথায় রেখেই মুকুলবাবু বলেন, “এই মাঠেই সভা করে কংগ্রেসের অধীরবাবু, সিপিএমের বিমানবাবুরা আমাদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ তুলেছেন। প্রথমেই সেই অভিযোগের জবাব দিতে চাই।” অধীরবাবুর অভিযোগ ছিল, আদ্রার উড়ালপুল রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার জন্যই হচ্ছে না। মুকুলবাবুর পাল্টা, “তিনি যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন তখনই কাশীপুরের দলীয় বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়ার অনুরোধে ওই উড়ালপুল অনুমোদন করা হয়েছে। আর এখন মিথ্যাচার করে অধীরবাবু দাবি করছেন আদ্রার উড়ালপুল তিনি করেছেন।”
আদ্রায় রেলের প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কে প্রাক্তন রেলমন্ত্রীর অভিযোগ, “আমরা আড়াই বছর রেল মন্ত্রকের দায়িত্ব ছিলাম। সেই সময়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু করিয়েছিলেন। পরে আমার সময়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রর জায়গায় জঙ্গল কাটার জন্য বন দফতরের অনুমতি নেওয়া ও অস্থায়ী ভাবে প্রকল্প এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করিয়েছি। কিন্তু, শেষ আড়াই বছরে কংগ্রেসের হাতে রেলমন্ত্রক থাকা সত্ত্বেও ওই প্রকল্পের কাজের এক ইঞ্চি অগ্রগতি হয়নি!”
অন্য দিকে, প্রচারের শেষ দিনে কাশীপুর ব্লক চষে বেড়িয়েছেন পুরুলিয়ার কংগ্রেস প্রার্থী নেপাল মাহাতো। সোমবার সকালে প্রচার শুরু হয়েছিল সিমলা-ধানাড়া পঞ্চায়েতের লিয়া গ্রাম থেকে। ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচার করেছেন নেপালবাবু। কখনও হুডখোলা গড়িতে চেপে রোড শো, কখনও হেঁটে গ্রামে ঘুরে ভোট চেয়েছেন।
বাঁকুড়ার সিপিএমের প্রার্থী বাসুদেব আচারিয়াও এ দিন শেষবেলার প্রচার সেরেছেন রঘুনাথপুরে। ঘটনা হল প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই সিপিএমের এই বর্ষীয়ান নেতা কার্যত পড়ে থেকেছেন বাঁকুড়ার ছ’টি বিধানসভা এলাকায়। রঘুনাথপুরে সেইভাবে প্রচার করেননি। সোমবার সেই খামতি কিছুটা দূর করার চেষ্টা করেছেন তিনি। বাসুদেববাবুর অবশ্য দাবি, “দীর্ঘদিন ধরে আমি রঘুনাথপুরকে চিনি। রঘুনাথপুরও আমাকে চেনে। তাই বাঁকুড়ায় প্রচারে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।” এ দিন সকালে রঘুনাথপুর ১ ব্লকের আড়রা পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচার সেরে সিপিএম প্রার্থী যান সাঁতুড়ি। বিকেলে রঘুনাথপুর শহরে মিছিল করেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রদীপ রায় বলেন “মহকুমা শহর হওয়ায় বিকেলে রঘুনাথপুর শহরে বাড়তি কিছু লোকজনকে পাওয়া যায়। তাই রঘুনাথপুরকেই শেষবেলার প্রচারের জায়গা হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল।”