কাল মকর সংক্রান্তি। মকর-স্নান উপলক্ষে বুধবার মাঝ রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর রাত পর্যন্ত কাতারে কাতারে পুণ্যার্থীর সমাগম হবে এবারও জয়দেব-কেঁদুলিতে। ইতিমধ্যেই বাউল, কীর্তনের দল এসে হাজির হয়েছে আখড়ায় আখড়ায়। প্রশাসনের তরফে প্রস্তুতিও তুঙ্গে।
প্রতিবারই মেলায় বাউল-কীর্তনের আখড়া বসে। জায়গার অভাবে বেশ কিছু আখড়া এবং আশ্রমকে এ বারও অজয় নদের চরে তুলে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা। চলতি বছর প্রায় সত্তরের কিছু বেশি সংখ্যক আশ্রম এবং আখড়া বাসা বেঁধেছে অজয় নদের চরে। এছাড়া স্থায়ী ও অস্থায়ী নিয়ে আড়াইশোর কিছু বেশি আশ্রম রয়েছে। ওই সমস্ত আশ্রমের প্যান্ডেলের কাজ শেষের দিকে। আশ্রম কমিটি সভাপতি তথা তিলোত্তমা আশ্রমের কর্ণধারা শিবনারায়ণ সাহা বলেন, “এবার কিছু বেশি আশ্রম এবং আখড়াকে অজয়ের চরে বসানো হয়েছে।”
লক্ষাধিক জন সমাগমের কথা মাথায়ে রেখে, আলো, বিদ্যুৎ, পানীয়জল এবং নিরাপত্তার ব্যাবস্থা নিয়ে দফায় দফায় মেলা কমিটি পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছে। স্নান ঘাট, মেলার জায়গা-সহ জয়দেব মেলা চত্বরের সার্বিক ব্যাবস্থা বিভিন্ন মহলের সঙ্গে মেলা কমিটি বৈঠক করেছে। মেলার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা এবং অশান্তি ও গণ্ডগোল এড়াতে ওয়াচ টাওয়ার, সিসিটিভি দিয়ে নজরদারি চালানোর জন্য প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পুলিশ।
ইলামবাজার বিডিও তথা জয়দেব মেলা কমিটির আহ্বায়ক প্রলয় সরকার বলেন, “মকর স্নান ঘিরে ভক্তদের যাতে কোনও অসুবিধে না হয়, তার জন্য প্রশাসনিক দিক থেকে সব রকমের উদ্যোগ নেওয়া হয়ছে। আলো, বিদ্যুৎ, পানীয় জল, নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার মত অত্যন্ত জরুরী পরিষেবাগুলি যাতে দর্শনার্থীরা পান সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
গতবার বেশি টাকা পার্কিং চার্জ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। মেলা কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার সে বিষয়টিও দেখছে কমিটি। যানবাহান রাখার জন্য তিনটি জায়গায় স্ট্যান্ডের ব্যবস্থা হয়েছে। বোলপুর-থেকে ভায়া ডোমরুট হয়ে জয়দেব আসার পথে রামপুর খেলার মাঠে, সিউড়ি-জয়দেব আসার পথে টিকরবেতার কাছে একটি ধান খেতের পাশে এবং দুর্গাপুর থেকে জয়দেব আসার পথে নদীর চরে নবগ্রামে।
মেলার পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে ১৫০ সুইপার, সত্য সাঁই বাবার আশ্রম থেকে স্বেচ্ছাসেবকের দুটি দল, মেলা কমিটির স্বেচ্ছাসেবক এবং দুবরাজপুর পুরসভা কিছু সুইপারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ, পানীয় জল, শৌচাগারের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়াও, দুটি সুলভ শৌচালয় থাকছে জয়দেব মেলা এলাকায়।