মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার জন্য ‘ভাড়া’ করা হয়েছে বাস। —নিজস্ব চিত্র।
একটা নয়। শুক্রবার জেলায় এক জোড়া নির্বাচনী জনসভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমটি নলহাটিতে, পরে সিউড়িতে। মুখ্যমন্ত্রীর সভা বলে কথা। কোথাও যাতে ত্রুটি-বিচ্যুতি না হয়, তা নিয়ে যেমন সতর্ক নেতাকর্মীরা তেমনি প্রশাসনের তৎপরতাও নজরে পড়ার মতো। পুরো ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেতে দু’টি জায়গায় জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা একাধিকবার ঘুরে দেখেছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে ডিআইজি (বর্ধামান রেঞ্জ) লক্ষ্মীনারায়ণ মিনাও সিউড়িতে সভাস্থলের প্রস্তুতি পর্ব ঘুরে দেখেন। বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খান জানিয়েছেন, দু’টি সভার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রথম সভাটি হবে নলহাটি হরিপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে। পরের সভাস্থল সিউড়ি শহরে পুলিশ লাইনের উল্টোদিকে চাঁদমারি মাঠে। আজ, শুক্রবার সকালে মালদহে সভা সেরে দুপুর ১টা নাগাদ হেলিকপ্টারে নলহাটিতে আসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুর ২টোয় সিউড়ির সভার সময় নির্ধারিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যেই দু’টি সভাস্থলের প্রস্তুতি পর্ব শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ সিউড়ি-র সভাস্থালে গিয়ে দেখা গেল, ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতা এবং ৩২\২৪ ফুট চওড়া মঞ্চের কাজ দেখাশোনা করছেন দলীয় কর্মীরা। দুরে দাঁড়িয়ে নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলাপরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ বা নলহাটিতে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময় খেয়াল তদারকি করছেন।
আজ জেলায় প্রচারে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিউড়ির চাঁদমারি ময়দানে
আকাশ থেকে নজরদারি। বৃহস্পতিবার ছবি তুলেছেন তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু মঞ্চ তৈরির কাজকর্ম দেখাশোনা নয়, কী ভাবে দু’টি সভাস্থল কানায় কানায় ভরিয়ে দেওয়া যায়, তার দিকেও সমান নজর জেলা নেতৃত্বের। তৃণমূল সূত্রের খবর, জেলার ভৌগলিক অবস্থানের দিক বিবেচনা করে দু’টি সভার জন্য জেলার ব্লকগুলিকে দু’ভাগে ভাগ করে কোন কোন ব্লকের কর্মী-সমর্থকেরা কোথায় যাবেন সেটাও পাকা করে ফেলেছে দল। সভায় পৌঁছতে প্রচুর যানবাহন লাগবে সেটারও জোগাড়ও নিশ্চিত। সভার জন্য রাস্তাঘাটে যানবাহন কম থাকলে, আজ জেলায় বিভিন্ন প্রান্তে সাধারণ মানুষ বাইরে বেরোলে সমস্যায় পড়বেন বলে আশঙ্কা জেলা বাস মালিক সমিতির। সমিতির সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, “সভার জন্য বাস তুলে নেওয়ায় সমস্যা তো হবেই। তবে এটা নতুন কিছু নয়।” জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “বাস তুলে নেওয়ার কথাতে আমাদের আপত্তি আছে। কারণ, বাস তুলে নেওয়ার কোনও নির্দেশ দলের তরফে নেই।” তাঁর দাবি, “মালিকদের সম্মতি নিয়েই দলীয় কর্মীরা বাস ভাড়া নিয়েছে।” তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূল নেতাদের সাফাই, “এমনিতেই এ ধরনের সভা থাকালে খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে যান না। তা ছাড়া শুক্রবার গুডফ্রাইডে। ছুটির দিন। তেমন দুর্ভোগ হবে না বলে মনে করি।”
সহ প্রতিবেদন: অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়।