নতুন স্কুটিতে চেপে বসন্ত উত্সবের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে, বন্ধুদের চমকে দিতে চেয়েছিল সে। দোলের ঠিক আগে আগেই তাই সে স্কুটি কেনা হয়েছিল। কিন্তু সেই স্কুটি কেনা যে কাল হয়ে দাঁড়াবে, কেই বা জানত!
নতুন স্কুটি কিনে মঙ্গলবার বাড়ি ফেরার পথেই, পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের ছাত্রী মৌ দাস(২০)-এর। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর বাড়ি বোলপুর থানার রাইপুর গ্রামে। বুধবার বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই ছাত্রীর দেহ ময়না তদন্ত করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ নিজের ভবন থেকে বোলপুরে একটি নতুন স্কুটি গাড়ি কিনে বাড়ি ফিরছিল রবীন্দ্র সঙ্গীতের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রী। বোলপুর রবীন্দ্র-বীথি বাইপাসে ওঠার মুখে রাস্তার ধারে একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা মারে তাঁর গাড়ি। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, দুর্ঘটনার সময় সজোরে ধাক্কা মারে স্কুটিটি। গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। স্থানীয়দের সহায়তায় তাঁকে প্রথমে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থায় অবন্নতি হওয়ায় রাতেই বর্ধমান মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্ধমানে ঘণ্টা খানেক চিকিত্সার পর তাঁর মৃত্যু হয়। খবর এসে পড়ে শান্তিনিকেতনেও। বুধবার ওই খবর পৌঁছানো মাত্রেই, শান্তিনিকেতনে শোকের ছায়া নেমে আসে। কালোবাড়ির পাশে একটি স্মরণ সভা করেন ভবনের অধ্যক্ষ-সহ সহপাঠী ছাত্রছাত্রীরা। সঙ্গীতভবনের ছাত্রী দেবোপমা মুখোপাধ্যায়, ঊর্মিমালা গুপ্ত বলেন, “অনুষ্ঠানের আগে এমন একটা ঘটনা সকলকেই খুব শোকের আবহের মধ্যে এনে ফেলেছে। সম্প্রতি ভবনের কয়েকটি অনুষ্ঠানে মৌ অংশগ্রহণ করেছিল। ও পড়াশোনায় যেমন ভাল ছিল, গানের গলাও ছিল খুবই সুন্দর।” সঙ্গীত ভবনের রবীন্দ্রসঙ্গীতের শিক্ষক মলয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ভাল ছাত্রী ছিল। বসন্ত উত্সবের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। কী ভাবে যে কি হয়ে গেল!” মৌয়ের মৃত্যুতে শোকসন্তপ্ত সঙ্গীতভবনের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা ঠিক করেছেন, এ বার আর দোল খেলবেন না।