অনুষ্ঠানবাড়ির সামনে জড়ো হয়ে রয়েছে এঁটো পাতা। পাশ কাটিয়ে যাবেন কি, কুকুর, বেড়ালে টানাটানি করে রাস্তাময় ছড়িয়ে রেখে নোংরা। ঘেন্নায়-রাগে বিরক্ত হয়ে পড়তেন প্রার্তভ্রমণকারীরা।
পুরুলিয়া পুরসভা জানাচ্ছে, এ বার আর এই সমস্যায় পড়তে হবে না কাউকে। ছবিটা বদলাতে চলেছে। পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ বার থেকে পুরসভার সাফাইকর্মীরাই অনুষ্ঠানবাড়ি থেকে এঁটোকাটা তুলে নিয়ে চলে যাবেন। এ জন্য পুরবাসীকে শুধু কিছু টাকা খরচ করতে হবে।
পুরসভার উন্নয়ন কমিটির সদস্য সুনয় কবিরাজ বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিভিন্ন এলাকায় অনুষ্ঠান বাড়ির ব্যবহৃত আবর্জনা ফেলার কাজ পুরসভাই করবে। শহরে বিয়েবাড়ি-সহ বেশির ভাগ অনুষ্ঠান বাড়িই হয় বিভিন্ন হোটেল বা লজে। ওদের সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়েছি, শহর পরিষ্কার রাখতে আমরা অনুষ্ঠানের আবর্জনা সাফাই করব। এ জন্য আমরা অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে ২৫০ টাকা নেব।”
এতদিন অতিথি-অভ্যাগতদের আপ্যায়নের জন্য ব্যবহৃত অনুষ্ঠান বাড়ির সামনে পাতা, গ্লাস ফেলে দেওয়া হত। এলাকায় রাস্তা সাফাইয়ের সময় পুরসভার কর্মীরা নোংরা তুলতে এসে ওই আবর্জনা তুলে নিয়ে যেতেন। কিন্তু ততক্ষণে ওই সব পাতা মাড়িয়েই লোকজনকে যাতায়াত করতে হত। চারপাশে ছড়িয়েও পড়ত আবর্জনা। আবার অনেক এলাকায় রোজ সাফাই কর্মীরা যান না। ফলে এ নিয়ে পথচারীদের ক্ষোভও রয়েছে। ফলে পুরসভার এই উদ্যোগে খুশি পুরবাসী।
পুরকর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ধর্মশালাতেও এই শহরে অনেক অনুষ্ঠান করা হয়। শীঘ্রই ধর্মশালাগুলির সঙ্গে আলোচনা করে পুরসভার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হবে। এ ছাড়া হোটেল, লজ বা ধর্মশালা বাদ দিয়ে যাঁরা নিজের পাড়ায় বা বাড়িতে অনুষ্ঠান করবেন তাঁরাও এই পরিষেবা পাবেন। শুধু অনুষ্ঠানের আগে পুরভবনে এসে কোথায়, কবে অনুষ্ঠান রয়েছে, তা জানিয়ে নির্দিষ্ট ‘ফি’ জমা করে যেতে হবে।
পুরুলিয়া হোটেল এন্ড লজ কিপার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কালীশঙ্কর দীক্ষিত বলেন, “আমরা পুরসভার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছি। কারণ বিভিন্ন হোটেল বা লজে কোনও অনুষ্ঠান হলে আবর্জনা ফেলার বিষয়টি আমাদেরই দেখতে হয়। পুরসভা এই দায়িত্ব নেওয়ায় ভালই হল।” শহরে ক্যাটারিং ব্যবসা যাঁরা করেন, তাঁদের অন্যতম পরাগ পালের কথায়, “পাড়ায় বা লোকের বাড়িতে অনুষ্ঠান হলে আবর্জনা ফেলার দায়িত্ব আমাদের উপরেই থাকে। গাড়ি ভাড়া করে সেই আবর্জনা ফেলতে হয়। তাই পুরসভা সেই কাজ করে দিলে আমাদের পক্ষে ভালই হবে।”