পাঁচটি অধ্যাপক পদে নিয়োগে অনিয়ম, মহিলা কর্মীর প্রতি বৈষম্য, এমন নানা অভিযোগ সম্পর্কে বিশ্বভারতীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। অভিযোগকারীদেরও মতামত জানাতে নির্দেশ দিয়ে বিশ্বভারতীর কর্মসচিবকে চিঠি পাঠিয়েছেন কমিশনের আন্ডার সেক্রেটারি সুষমা রাঠৌড়। বিশ্বভারতীর কর্মসচিব ডি গুণশেখরণ এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সোমবার বিশ্বভারতীর উপাচার্যের মুখপাত্র সন্দীপ বসু সর্বাধিকারী শুধু বলেন, “সঙ্গীতভবনে নিয়োগের বিষয়টি বিচারাধীন। এ নিয়ে মন্তব্য করব না। লিঙ্গবৈষম্যের অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
বিশ্বভারতীর বেশ কিছু নিয়োগে বেনিয়ম ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। একটি ক্ষেত্রে বোলপুর থানায় এফআইআর-ও হয়েছে। অভিযোগকারীরা প্রায় সকলেই ওই সব পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করে ব্যর্থ হয়েছেন। বিশ্বভারতীর কিছু কর্মীও লিঙ্গ বৈষম্য, প্রাপ্য থেকে বঞ্চনা ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে অবিচারের অভিযোগ করেছেন। ওই সব চিঠি পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক, উচ্চ শিক্ষা দফতর ও ইউজিসি-র কাছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতি বারই দাবি করেছেন, অভিযোগ ঠিক নয়। এবং গোটা ঘটনায় বারবার বিশ্বভারতীর মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সম্মানহানি হচ্ছে।
ইউজিসি-র ২৫ জুলাই পাঠানো চিঠিতে (এফ ৩৫-৮/২০১২সিইউ) দেখা যাচ্ছে, গত ছ’মাসে বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় উচ্চ শিক্ষা দফতর ও ইউজিসি-র কাছে ছ’টি অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযোগকারীদের অন্যতম বিশ্বভারতীরই কর্মী পূর্বা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শচীদুলাল ঘোষ। নিয়োগের ক্ষেত্রে ইউজিসি ও বিশ্বভারতীর নিয়ম অবজ্ঞা করার অভিযোগ করেছেন শান্তিনিকেতনেরই বাসিন্দা বিকাশ সাহা। অভিযোগ করেছেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী তথা বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মনোজ মুরলী নায়ারও। তাঁর দাবি, রবীন্দ্রসঙ্গীতের অধ্যাপক নিয়োগে বিশ্বভারতী স্বজনপোষণ করেছে। কথাকলির অধ্যাপক পদে নিযুক্ত
এক ব্যক্তি জাল নথিপত্র দিয়েছেন বলে বোলপুর থাকায় একটি এফআইআর-ও হয়েছে। বিশ্বভারতীর উপাচার্যের নির্দেশে গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি সম্প্রতি অবশ্য ওই অধ্যাপককে ‘ক্লিন চিট’ দিয়েছে। ইউজিসি-র চিঠির প্রেক্ষিতে বিশ্বভারতী কী করবে, এ দিন কর্তৃপক্ষ সে বিষয়ে কিছু জানাননি।