বেহাল নিকাশির কারণে শুক্রবার দুপুরে কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টিতেই, জলমগ্ন হল বোলপুর সহ আশেপাশের একাধিক এলাকা। এমনকী, একাধিক দোকান, বাজার সহ প্রাথমিক বিদ্যালয়েও জল জমে যায়। অভিযোগ, উপযুক্ত নিকাশি ব্যাবস্থা না থাকায় এবং কোনও কোনও এলাকায় প্রয়োজনীয় সংস্কার না হওয়ায় এ দিন দুপুরের বৃষ্টিতেই একাংশ জলমগ্ন হয় শহরের।
শুক্রবার দুপুর থেকে বজ্র বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি নামে বোলপুর শহর এবং সংলগ্ন এলাকায়। প্রায় এক ঘণ্টা নাগাড়ে বৃষ্টি চলে। তাতেই জল জমে যায় শহরের একাধিক এলাকায়। বোলপুর লাগোয়া শ্রীনিকেতন বাজার এবং সংলগ্ন সুরুল নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়ে হাঁটুর ওপর জল জমে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শোভা বন্দ্যোপাধ্যায় চক্রবর্তী বলেন, “দুপুরে পড়ুয়াদের মিড ডে মিল দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভারি বৃষ্টি শুরু হয়। কোনও মতে আমরা পড়ুয়াদের নিয়ে বিদ্যালয়ের ক্লাস ঘরে থাকি। কিন্তু নিকাশি নালা সমস্যার জেরে কিছু ক্ষণের মধ্যে হাঁটুর ওপর জল জমে। ক্লাসঘর, অফিসঘরে জল জমে যায়।”
বিদ্যালয় সূত্রে খবর, ঘণ্টা খানেকের বেশি ওই অবস্থায় থাকা ছাড়া অন্য উপায় ছিল না। সম্প্রতি রাস্তা সংস্কারের জন্য আরও অনেকটা উঁচু হওয়ায় রাস্তার জল ঢুকছে বিদ্যালয়ে। শোভা দেবীর দাবি, “একাধিক স্তরে বহু বার জানিয়েছি। ফি বছর বৃষ্টিতে একই হাল হয়।”
অন্যদিকে বোলপুর-শ্রীনিকেতন রাস্তার ওপর চৌরাস্তা লাগোয়া এলাকায় জল নিকাশি ব্যাবস্থা উপযুক্ত বিধি না মেনে হওয়ায় জল জমেছে ওই এলাকায়। জল জমে এলাকার একাধিক দোকান এবং রাস্তার দু’ ধারে থাকা বেশ কিছু বাড়িতে। জল জমে যায় বোলপুর-শ্রীনিকেতন রাস্তার উপর, জামবুনি এলাকা, ভুবনডাঙা, হাটতলা, বাঁধগড়াতেও।
বোলপুর সিপিএমের জোনাল কমিটির সম্পাদক উৎপল রুদ্র বলেন, “শহর বাড়ছে, কিন্তু পুরসভার কোনও নিকাশি পরিকল্পনা নেই। ৮১ থেকে ৯০ সাল পর্যন্ত বামেরা পুরসভায় ক্ষমতায় ছিল যখন, তখন আমরা ওয়ার্ড কমিটি, এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে কনভেনশেন করতাম। নিকাশি নিয়ে আলোচনা হত। ২০১০ সালে সোমনাথবাবুর সঙ্গে আলোচনা করে বোলপুরের নিকাশি নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কোনওটাই কার্যকর হয়নি।”
স্থানীয় বাসিন্দা, রামস্বরূপ ভকত, অশোক ভকত, রমেশ ভকতরা জানান, নিকাশি নালা থাকা এলাকাগুলিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং নিকাশি নালার জন্য উপযুক্ত ব্যাবস্থা অবিলম্বে না নিলে, আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হবে। বারবার জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।
বোলপুরের বিডিও শমিক পানিগ্রাহী বলেন, “গোটা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের পুরসভার পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত বলেন, “কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”