বোলপুরে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
থানা ঘেরাও অভিযানে যোগ দিতে যাওয়ার আগে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুপুরে পাড়ুই থানার ধানাই মোড়ের ঘটনা। রাত পর্যন্ত অবশ্য ঘটনায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে, এক জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, পূর্ব নিধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ কসবা অঞ্চলের শতাধিক বিজেপি কর্মী-সমর্থক একটি বাসে চেপে পাড়ুই থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে যো দিতে আসছিলেন। ধানাই মোড়ের কাছে পৌঁছতেই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বাসের উপরে হামলা করেন বলে বিজেপির অভিযোগ। বোমাবাজি করে লাঠি, রড় দিয়ে বাস ভাঙচুর করা হয়। আতঙ্কিত বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা বাস ছেড়ে যে দিকে পারেন ছুট লাগান। দলের জেলা কমিটি সদস্য উজ্জ্বল মজুমদারের অভিযোগ, “দলের কর্মসূচি বানচাল করতে পরিকল্পিত ভাবে তৃণমূল হামলা করেছে। আমাদের বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক জখম হয়েছেন। আপাতত পুলিশকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছি।” ঘটনার খবর পেয়ে পাড়ুই থানার পুলিশ অবশ্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কসবা এবং সাত্তোর এলাকার দায়িত্বে থাকা তৃণমূলের সাত্তোর অঞ্চল সম্পাদক শেখ মুস্তফা। তাঁর দাবি, “বিজেপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে। ওই ঘটনার সঙ্গে দলের কেউ যুক্ত নন।”
এ দিকে, এ দিন জেলার বিভিন্ন থানায় বিজেপি সফল ভাবে তাদের রাজ্যজুড়ে চলা ওই কর্মসূচি পালন করেছে। পুলিশের পক্ষপাতমূলক আচরণের প্রতিবাদে এবং এলাকায় আইনের শাসন ফেরানোর দাবিতে দল থানায় থানায় ঘেরাও, বিক্ষোভের কর্মসূচি নেয়। এ দিন দলের জেলা সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং জেলা কমিটির সম্পাদক তথা ইলামবাজার পর্যবেক্ষক চিত্তরঞ্জন সিংহের নেতৃত্বে দলের কয়েকশো কর্মী-সমর্থক ইলামাবাজার থানায় প্রতীকী ওই কর্মসূচিতে সামিল হন। সেখানে আগামী দিনে নিজের দায় এড়াতে পারবেন না বলে জানিয়ে ওই কর্মী-সমর্থকেরা থানার ওসি তরুণ চট্টরাজকে হুঁশিয়ারিও দেন। ইলামবাজার থানায় ঘণ্টা দু’য়েক কর্মসূচি চলার পরে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বোলপুর থানায় একই দাবিতে বিজেপি ঘেরাও, বিক্ষোভ ও অবস্থান শুরু করে। সেখানে তাঁরা পুলিশ পিটিয়ে খবরের শিরোনামে আসা যুব তৃণমূল নেতা সুদীপ্ত ঘোষকে দ্রুত গ্রেফতারির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
অন্য দিকে, একই কর্মসূচিতে সাঁইথিয়া থানায় যোগ দিয়ে সারদা-কাণ্ডে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের জড়িত থাকার অভিযোগ নিয়ে সরব হয় বিজেপি। সকালে সাঁইথিয়ায় মিছিল করে দলের কর্মী-সমর্থকেরা থানায় যান। দলের তরফে পুলিশের কাছে রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে তাঁরা একটি স্মারকলিপিও দেন। দলের জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল বলেন, “রাজ্যের ১৭ লক্ষ প্রান্তিক মানুষ সারদায় প্রতারিত হয়েছেন। গরিব মানুষদের টাকা খেয়ে তৃণমূলের নেতারা এখন মন্ত্রী হয়ে বসে আছেন। সিবিআই সব কটা রাঘব বোয়ালকে মানুষের সামনে নিয়ে আসছে। মুখ্যমন্ত্রী এর দায় এড়াতে পারেন না। তাঁকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।”