রাজ্য সরকার বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনায় জোর দিলেও একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগের জন্য পড়ুয়াদের ভর্তির ফর্ম না দেওয়ায় বিতর্কে জড়াল পুরুলিয়া শহরের একটি স্কুল। অনুমোদন থাকলেও কেন বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির জন্য ফর্ম দেওয়া হচ্ছে না, তা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইতে চলেছে জেলা শিক্ষা দফতর।
পুরুলিয়া শহরের দুলমি এলাকার নেতাজি বিদ্যাপীঠ নামে ওই স্কুল শুরু হয় ১৯৬৬ সালে। পরে ১৯৮৬ সালে ওই স্কুলে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে কলা বিভাগে পড়ানোর অনুমোদন আসে। পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও গণিত বিজ্ঞানের এই তিনটি বিষয়ে পড়ানোর অনুমোদন মেলে ২০১৩ তে। গত বছর এই স্কুলে বিজ্ঞানে তিনজন পড়ুয়া ভর্তি হলেও পরে তারা স্কুল ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। এ বার স্কুল থেকে কলা বিভাগে ভর্তির জন্য ফর্ম দেওয়া হলেও বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ফর্ম না দেওয়ায় বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যে কলা বিভাগে ভর্তির জন্য মেধা তালিকাও প্রকাশিত হয়ে গিয়েছে।
জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধক্ষ্য সুষেণচন্দ্র মাঝি বলেন, “বিজ্ঞান পড়ানোর অনুমোদন থাকলেও এ বার কেন ভর্তির ফর্ম দেওয়া হয়নি খোঁজ নেব।” স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই স্কুলে জীববিদ্যা বিভাগের কোনও শিক্ষক ছিলেন না। গত বছরের ডিসেম্বরে এই বিষয়ের একজন শিক্ষক স্কুলে যোগ দেন। ওই বিষয়টি পড়ানোর অনুমতি চেয়ে গত এপ্রিল মাসে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথমে জেলা শিক্ষা দফতর ও পরে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে আবেদন জানায়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুবলচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের বেশির ভাগেরই ঝোঁক জীববিদ্যা নিয়ে বিজ্ঞান পড়ার। তার উপরে গত বছর বিজ্ঞান নিয়ে কেউ পড়েনি। এ দিকে জীববিদ্যা বিষয়ের অনুমোদন না আসায় আমরা ফর্ম বিলি করতে পারিনি।” জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রাধারানি মুখোপাধ্যায় বলেন, “কোনও বিষয় অনুমোদনের জন্য কিছু সময় লাগে। বিষয়টি আমি দেখছি। তবে বিজ্ঞান বিভাগের তিনটি বিষয়ে পড়ানোর অনুমোদন থাকলেও কেন ওই স্কুলে এখনও পড়ুয়াদের ভর্তির জন্য ফর্ম দেওয়া হয়নি তা জানতে চাওয়া হবে।”
প্রধান শিক্ষকের দাবি, জীববিদ্যার অনুমোদনের জন্য তাঁরা এতদিন অপেক্ষা করছিলেন। তবে বাকি তিনটি বিষয় নিয়ে যারা বিজ্ঞান পড়তে চায়, তাদের জন্য শীঘ্রই ফর্ম বিলি করার কথা ভাবা হচ্ছে। স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক জগদীশ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ২৬ জুন সমিতি বৈঠক করে বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্র ভর্তির সিদ্ধান্ত নেবে।