পুরপ্রধানের গাড়ির বিল নিয়ে তরজা বাঁকুড়ায়

গত পাঁচ বছর ধরে পুরসভার কাজের জন্য ব্যয় হওয়া যাতায়াতের বিল ভোটের মুখে বাজেটে অনুমোদন করাতে গিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়লেন বাঁকুড়ার পুরপ্রধান শম্পা দরিপা। সোমবার পুরসভায় এ নিয়ে কাউন্সিলরদের বোর্ড মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়েছিল পুরপ্রধানের তরফে। বিষয়টিকে অবৈধ বলে অভিযোগ তুলে বৈঠক বয়কট করেন বাম কাউন্সিলরেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:০৬
Share:

গত পাঁচ বছর ধরে পুরসভার কাজের জন্য ব্যয় হওয়া যাতায়াতের বিল ভোটের মুখে বাজেটে অনুমোদন করাতে গিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়লেন বাঁকুড়ার পুরপ্রধান শম্পা দরিপা। সোমবার পুরসভায় এ নিয়ে কাউন্সিলরদের বোর্ড মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়েছিল পুরপ্রধানের তরফে। বিষয়টিকে অবৈধ বলে অভিযোগ তুলে বৈঠক বয়কট করেন বাম কাউন্সিলরেরা।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে খবর, বৈঠক চলাকালীন গত পাঁচ বছরের যাতায়াত বাবদ খরচের বিল বাজেটে পেশ করার প্রসঙ্গ উঠতেই আপত্তি তোলেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, গত চার বছরের বাজেট পেশ হয়ে অনুমোদন হয়ে গিয়েছে। তাই সেই বছরের খরচ এখন দেওয়া আইন-বিরুদ্ধ। পুরপ্রধান চাইলে ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরের গাড়ির খরচের টাকার আবেদন করতে পারেন। বৈঠকে বিরোধীদের আপত্তি অবশ্য নাকচ করে দেয় তৃণমূল শিবির। তাদের পাল্টা যুক্তি, বাম আমলেও এই ভাবে পাঁচ বছরের গাড়ির খরচ এক সঙ্গে নিতেন পুরপ্রধান। এর পরেই বৈঠক বয়কট করে বেরিয়ে যান চার জন বাম কাউন্সিলর। বাঁকুড়া পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান শিউলি মিদ্যা পরে বলেন, “আইন বিরোধী কাজ করছেন পুরপ্রধান। প্রতি বছর পুরসভার বাজেট পেশ হয়। যদি যাতায়াতের গাড়ির বিল অনুমোদন করাতেই হত, তা হলে নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছরের বাজেটে পেশ করতে হত। বিগত পাঁচ বছরের গাড়ির বিল এ ভাবে এক সঙ্গে পাশ করানো যায় না।”

একই সঙ্গে তৃণমূলের পুরপ্রধানকে বিঁধে তাঁর কটাক্ষ, “চেয়ারে বসার আগে শম্পাদেবী বলেছিলেন তিনি পুরসভা থেকে কোনও টাকা পয়সা নেবেন না। ওই সব কথা যে ভাঁওতাবাজি ছিল, এত দিনে তা প্রমাণ হল!” এ দিন বৈঠক বয়কটের পরে সিপিএমের তরফে একটি সাংবাদিক বৈঠকেরও আয়োজন করা হয় পুরভবনের সামনে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের বাঁকুড়া জোনাল কমিটির কমিটির সম্পাদক প্রতীপ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমরা এত দিন জানতাম তৃণমূলের পুরপ্রধান পুরসভা থেকে কোনও টাকা পয়সা নেন না। এখন বুঝে উঠতে পারছি না, হঠাৎ কী এমন হল, যে তাঁকে যাতায়াতের খরচ নিতে হচ্ছে।”

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে বাঁকুড়া পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মহাপ্রসাদ সেনগুপ্তের পাল্টা দাবি, “শিউলি মিদ্যাও পুরপ্রধান থাকার সময়ে এই পদ্ধতিতেই এক সঙ্গে পাঁচ বছরের যাতায়াত খরচ এক সঙ্গে নিয়েছেন। তাই আইনের প্রশ্ন তাঁর মুখে মানায় না!” বিদায়ী পুরপ্রধান শম্পাদেবীরও বক্তব্য, “বাঁকুড়া পুরসভার এটাই ট্র্যাডিশন। আগের চেয়ারম্যানরাও পাঁচ বছরের গাড়ির বিল একসঙ্গেই পাশ করিয়েছেন। তা হলে আমার ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে কেন?” তাঁর অভিযোগ, “গত পাঁচ বছরে আমাদের বিরোধিতা করার মতো কোনও অস্ত্র হাতে পায়নি বিরোধীরা। তাই এখন পুরভোটের মুখে অহেতুক গাড়ির বিল নিয়ে তারা হইচই করছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement