দু’বছরেও কাজে এল না বাসস্ট্যান্ড

রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে নারকেলতলা মোড়, রামমন্দির মোড়, বটতলা মোড়। এই সমস্ত জায়গায় নলহাটি শহরের উপর দিয়ে যাওয়া বাসগুলি দাঁড়ায়। এর ফলে রাস্তা দখল হয়ে যাচ্ছে। অথচ জাতীয় সড়কের ধারে তিন বিঘা জমির উপরে প্রায় ১ কোটি টাকা খরচ করে নির্মিত নলহাটি বাসস্ট্যান্ড (স্বামী বিবেকানন্দ বাসস্ট্যান্ড) কোনও কাজেই লাগছে না। পুরসভার উদাসীনতায় দু’বছর আগে উদ্বোধন হয়ে যাওয়া স্বামী বিবেকানন্দ বাসস্ট্যান্ড এখনও সাধারণ মানুষের উপকারে আসেনি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

নলহাটি শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৪ ০১:৩৮
Share:

উদ্বোধনের পরে পড়ে রয়েছে বিবেকানন্দ বাসস্ট্যান্ড। (ডান দিকে) ভেঙে গিয়েছে মূর্তি। ছবি: অনির্বাণ সেন।

রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে নারকেলতলা মোড়, রামমন্দির মোড়, বটতলা মোড়। এই সমস্ত জায়গায় নলহাটি শহরের উপর দিয়ে যাওয়া বাসগুলি দাঁড়ায়। এর ফলে রাস্তা দখল হয়ে যাচ্ছে। অথচ জাতীয় সড়কের ধারে তিন বিঘা জমির উপরে প্রায় ১ কোটি টাকা খরচ করে নির্মিত নলহাটি বাসস্ট্যান্ড (স্বামী বিবেকানন্দ বাসস্ট্যান্ড) কোনও কাজেই লাগছে না। পুরসভার উদাসীনতায় দু’বছর আগে উদ্বোধন হয়ে যাওয়া স্বামী বিবেকানন্দ বাসস্ট্যান্ড এখনও সাধারণ মানুষের উপকারে আসেনি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

Advertisement

২০১২ সালে ২৪ মার্চ রাজ্যের দুই মন্ত্রী নুরে আলম চৌধুরী ও চন্দ্রনাথ সিংহের উপস্থিতিতে ওই বাসস্ট্যান্ডের উদ্বোধন হয়। নলহাটি পুররসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসস্ট্যান্ড তৈরি করা হয় মূলত নলহাটি শহরের উপর দিয়ে চলাচলকারী বহরমপুর, লালগোলা, ফরাক্কা, মালদা, কৃষ্ণনগর, নবদ্বীপ, শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, সিউড়ি, আসানসোল, দুর্গাপুর, পুরুলিয়া, খড়্গপুর, বাঁকুড়া-সহ বিভিন্ন দূরপাল্লার সরকারি ও বেসরকারি বাস ওই বাসস্ট্যান্ডে ঢুকবে। একই ভাবে নলহাটি থেকে যে সমস্ত বাস রামপুরহাট, মুরারই, রাজগ্রাম, মহুরাপুর, মহেশপুর, বৈধরা, বিশোড়, কুশমোড় এই সমস্ত রুটে চলাচলকারী বাসগুলিও এই বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়ার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

শুধু তাই নয়, শহরের সৌন্দর্যায়নের জন্য নবনির্মিত সুউচ্চ হাইমাস আলো বসানো হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে যাত্রী প্রতীক্ষালয়ও। কিন্তু বাস না ঢোকায় ওই যাত্রী প্রতীক্ষালয় বর্তমানে লরিচালক, খালাসিদের বিশ্রাম নেওয়ার জায়গায় পরিণত হয়েছে। সেখানে লরি মেরামতি করা হয়। লরি দাঁড় করাতে গিয়ে বাসস্ট্যান্ডের স্বামী বিবেকানন্দ মূর্তি, ফলকের জায়গা ভেঙে গিয়েছে। এক কথায়, নলহাটি পুরসভার পরিকল্পনা অভাবে দু’বছর পেরিয়ে গেলেও তার বাস্তবরূপ যায়নি। কিন্তু আজও কেন নতুন বাসস্ট্যান্ড চালু হল না? তার সদুত্তর মেলেনি নলহাটি পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান বিপ্লব ওঝার কাছে। তিনি বলেন, “মূলত নতুন বাসস্ট্যান্ড চালু হলে জাতীয় সড়কের ধারে চলাচলকারী যানবাহনের যেমন যানজট এড়ানো সম্ভব হবে তেমনই নতুন বাসস্ট্যান্ডে স্টল তৈরি করে সেগুলি ভাড়া দিয়ে কিছু বেকার ছেলের যেমন উপার্জনের ব্যবস্থা হবে তেমনি পুরসভা তার নিজের আয় বাড়াতে পারবে।”

Advertisement

কিন্তু বাসস্ট্যান্ড তো চালুই হল না। আয় বাড়ানোর প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে? পুরসভার বর্তমান পুরপ্রধান রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ বলেন, “বাসস্ট্যান্ডে যে হাইমাস আলো লাগানো হয়েছে সেটা কেবলমাত্র বাসস্ট্যান্ড চত্বর আলোকিত করার জন্য নয়। ওই আলোর সাহায্যে ১, ২ এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ড আলোকিত হয়। বাসস্ট্যান্ড চালু করার জন্য আমরা বাস মালিকদের একাধিক বার বৈঠক করেছি। তাদের কিছু দাবি আছে। সেই সমস্ত দাবিগুলি বিবেচনা করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা চলছে। আশা করি খুব শীঘ্রই বাসস্ট্যান্ড চালু করা যাবে।” জেলা বাসমালিক সমিতির রামপুরহাট শাখার সম্পাদক ইয়ার সেলিম বলেন, “নলহাটিতে বাসস্ট্যান্ড না বাসস্টপেজ এই দু’টো কথা আগে পরিষ্কার করে দেওয়া উচিত। কারণ বাসস্ট্যান্ডে স্থানীয় ভাবে যেমস্ত রুটে বাস কেবলমাত্র নলহাটি থেকে যাতায়াত করে সেগুলি বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস ছাড়তে পারে। কিন্তু রামপুরহাট বা সিউড়ি থেকে নলহাটি বাসস্ট্যান্ড দিয়ে বাস চলাচল করাতে একটা সময়ের ব্যাপার আছে। কারণ নলহাটিতে যে জায়গায় বাসস্ট্যান্ড করা হয়েছে সেই জায়গা বাসস্টপেজ থেকে অনেক দূরে। এ ছাড়া নলহাটিতে আমাদের কোনও হল্টিং টাইম নেই। দু’এক মিনিট স্টপেজ দিয়ে আমরা প্যাসেঞ্জার উঠানো-নামানো করি। এক্ষেত্রেই আমাদের আপত্তির কথা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এখন যদি ফের পুরসভা আলোচনায় বসতে চায়, আমরা রাজি আছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement