থালা বাজিয়ে কাজের দাবি

থালা-বাটি বাজিয়ে মঙ্গলবার বাঁকুড়া শহরে মিছিল করলেন পঞ্চায়েতের সম্পদ কর্মীরা। মুখে স্লোগান কাজ হারালে খাব কী? কাজ বন্ধের নির্দেশ পেয়ে এ বার বিকল্প কাজের দাবি তুলেছেন তাঁরা। এতদিন স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী গড়া ও গোষ্ঠীগুলির সুবিধা অসুবিধার খেয়াল রাখার জন্য ‘স্বর্ণজয়ন্তী স্বরোজগার যোজনা’ কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বামফ্রন্ট আমলে সম্পদ কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছিল গ্রামপঞ্চায়েত গুলিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৫৭
Share:

বাঁকুড়ার পথে পঞ্চায়েতের সম্পদ কর্মীরা। মঙ্গলবারের নিজস্ব চিত্র।

থালা-বাটি বাজিয়ে মঙ্গলবার বাঁকুড়া শহরে মিছিল করলেন পঞ্চায়েতের সম্পদ কর্মীরা। মুখে স্লোগান কাজ হারালে খাব কী?

Advertisement

কাজ বন্ধের নির্দেশ পেয়ে এ বার বিকল্প কাজের দাবি তুলেছেন তাঁরা। এতদিন স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী গড়া ও গোষ্ঠীগুলির সুবিধা অসুবিধার খেয়াল রাখার জন্য ‘স্বর্ণজয়ন্তী স্বরোজগার যোজনা’ কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বামফ্রন্ট আমলে সম্পদ কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছিল গ্রামপঞ্চায়েত গুলিতে। কিন্তু গত অক্টোবর মাসে এক নির্দেশিকায় কাজ হারিয়েছেন তাঁরা। তাই এ দিন জেলার শতাধিক সম্পদ কর্মী বিকল্প কাজে নিয়োগের দাবি তুলে মিছিল করে গিয়ে জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতরে স্মারকলিপি দেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, নতুন স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী গড়তে ও তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা দেখভাল করতে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে দু’জন করে সম্পদ কর্মী নিযুক্ত করা হয় বামফ্রন্ট আমলে। এই জেলায় প্রায় ৩৫০ জন পুরুষ ও মহিলা সম্পদ কর্মী রয়েছেন। এই কাজের জন্য মাসে ৭৫০ টাকা সাম্মানিক পেতেন তাঁরা। এ ছাড়াও যাতায়াতের খরচ, প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আলাদা করে আরও কিছু বাড়তি টাকা হাতে আসত তাঁদের। গত অক্টোবরে কেন্দ্রীয় সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করে সম্পদ কর্মীদের কাজ আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এমনকী আগামী দিনে শুধু মহিলারাই সম্পদ কর্মী হিসেবে কাজ করতে পারবেন এবং নতুন করে তাঁদের নিয়োগ করতে হবে বলেও নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। এই ঘটনার জেরে পুরুষ সম্পদকর্মীরা তো বটেই, কাজ হারানোর আশঙ্কা করছেন মহিলা সম্পদ কর্মীরাও। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনের রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা।

Advertisement

উল্লেখ্য, ২০০৭ সাল থেকে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে সম্পদ কর্মী নিয়োগ করা হয়। তখন এই প্রকল্পটির নাম ছিল ‘স্বর্ণজয়ন্তী স্বরোজগার যোজনা’। পরবর্তী কালে কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পের নাম দেয় ‘ন্যাশনাল রুরাল লাইফলিহুড মিশন’। রাজ্যে পালাবদলের পরে প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে ‘আনন্দ ধারা’ রাখে রাজ্য সরকার। বাঁকুড়া জেলা সম্পদকর্মী অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি বল্পব মুখোপাধ্যায়ের দাবি, কেন্দ্র প্রথম থেকেই এই প্রকল্পে মহিলা কর্মী রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু বামফ্রন্ট সরকারের সিদ্ধান্তে পুরুষদেরও কাজে নেওয়া হয়। তাঁর আক্ষেপ, “২০১২ সালে কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আশ্বাস দিয়েছিলেন, আমাদের কেউ কাজ হারাবেন না। কিন্তু এখন তাঁর সরকারই কথা রাখছে না।” আনন্দ ধারা-র জেলা প্রকল্প আধিকারিক শশাঙ্কশেখর মণ্ডল বলেন, “আপাতত সম্পদ কর্মীদের কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ মেনেই সম্পদ কর্মীদের কাজ বন্ধ করা হয়েছে।”

বাঁকুড়া জেলা পরিষদের বিরোধী দল নেতা সিপিএমের সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতে, “এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের তাঁদের অন্যান্য প্রকল্পের কাজে যুক্ত করা উচিত।” জেলা পরিষদের নারী শিশু উন্নয়ন, জনকল্যান ও ত্রাণ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ রামিজা বেগম সেখ বলেন, “গোষ্ঠীগুলি যেহেতু মহিলাদের, তাই সম্পদকর্মী হিসেবে মহিলাদের নেওয়াই ভাল। তবে পুরুষ সম্পদ কর্মীদের প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করার বিষয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি।”

স্বাস্থ্য শিবির। বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পঞ্চায়েত স্তরে শুরু হল স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির। সোমবার ৩৫টি পঞ্চায়েতে এই শিবিরের আয়োজন করা হয়। আগামী ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলার প্রতিটি পঞ্চায়েতে অন্তত একদিন করে এই শিবির হবে। জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানান, স্বাস্থ্য শিবিরে রোগ নির্ণয় হলে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা প্রকল্পের মধ্যে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের উন্নতমানের চিকিত্‌সার জন্য নার্সিংহোম বা সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে। যাঁরা এখনও এই প্রকল্পের আওতায় আসেননি তাঁদের দ্রুত নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement