তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধে একের পর এক অনাস্থা চলছেই। দুবরাজপুরের বালিজুড়ির পর এবার খয়রাশোলের লোকপুর প্রধানের বিরুদ্ধেও অনাস্থা আনল বিক্ষুব্ধ সদস্যরা। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “কোথায় সমস্যা দলগতভাবে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।” মলয়বাবু যাই বলুন, পর পর এমন ঘটনায় অস্বস্তিতে জেলা নেতৃত্ব।
ঘটনা হল, যেভাবে দিন কয়েক বালিজুড়িতে তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে আনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন বিক্ষুব্ধ সদস্যরা, সেই একই পথে লোকপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে যে সাতজন সদস্য সই করেছেন তাঁদের মধ্যে ৫ জনই তৃণমূল সদস্য। দুটি পঞ্চায়েতের মধ্যে পার্থক্যও একটি জায়গাতেই। দুবরাজপুরে তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নেই। খয়রাশোল পঞ্চায়েতের তৃণমূলের ঘোষ ও মুখোপাধ্যায় গোষ্ঠীর কোন্দল বহুচর্চিত।
এ দিকে মঙ্গলবার বিকালে ওই প্রস্তাব জমা পড়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন খয়রাশোলের যুগ্ম বিডিও অভিষেক মিশ্র। তিনি বলেন, “এর পর আইনগত পদক্ষেপ করা হবে।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে খয়রাশোল ব্লকের তৃণমূলের দুই বিবাদমান নেতা অশোক ঘোষ ও অশোক মুখোপাধ্যায়ের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়ছিল। কোন পক্ষের মনোনীত সদস্য কটি আসন পাবে এই নিয়ে বিরোধ চরমে ওঠে।
জেলা নেতৃত্বের নির্দেশক্রমে শেষ পর্যন্ত আসন সমঝোতাতে রাজি হলেও চোরা স্রোতের মত দুই নেতার বিবাদ থেকেই গিয়েছিল। ওই পঞ্চায়েতের ১১টি আসনের মধ্যে ৮টি আসন পায় তৃণমূল। ঘোষগোষ্ঠীর ৪টি ও মুখোপাধ্যায় গোষ্ঠী ৪টি আসন পায়। বাকি তিনটি আসনের মধ্যে ১টি আসন পায় বিজেপি। নির্দল পায় ২টি। এলাকা সূত্রের খবর নির্দল প্রার্থীদের নৈতিক সমর্থন দিয়েছিল সিপিএম। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠিত হওয়ার ঠিক আগেই খুন হন অশোক ঘোষ। ওই খুনে অভিযুক্ত হন অশোক মুখোপাধ্যায়-সহ ওই গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরা। ফলে ঘোষ গোষ্ঠী তাদের ৪ সদস্য ১ বিজেপি এবং ২ নির্দলকে নিয়ে বোর্ড গড়ে। প্রধান হন বন্দনা চৌধুরী।
বিরোধী আসনে থাকেন মুখোপাধ্যায় গোষ্ঠীর ৪ তৃণমূল সদস্য। ২০১৪ সালের অগস্টে অশোক মুখোপাধ্যায় খুন হলে, ঘোষগোষ্ঠীর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। ওই গোষ্ঠীর কয়েকজন নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। কেউ কেউ পলাতক। ঘটনা হল, শ্রীদাম বাউড়ি, শেখ বুদ্রাইল, চম্পা কাপুরি, নিরুপমা রুইদাসের মতো মুখোপাধ্যায় গোষ্ঠীর নির্বাচিত সদস্যরা তো ছিলেনই সঙ্গে সই করেছেন ঘোষ পন্থী ভবানী পাল ও এক বিজেপি ও এক নির্দল সদস্য।
শ্রীদাম বাউড়ি, শেখ বুদ্রাইলরা বলছেন, প্রধান অগণতান্ত্রিকভাবে পঞ্চায়েত চালানোয় এবং উন্নয়ন ঠিক মতো না হওয়ায়া তাঁর বিরুদ্ধে আনাস্থা আনা হয়েছে। সঙ্গে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে।
এ দিকে অভিযোগ মানেননি প্রধান বন্দনাদেবী। তিনি বলেন, “ওঁরা যে অভিযোগের কথা বলছেন, সেগুলি সব ভিত্তিহীন। তবে আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব যে আনা হয়েছে সেটাই সরকারি ভাবে আমি জানি না। তাই এই নিয়ে মন্তব্য করার মানে হয় না।”
পোস্ত চাষ নষ্ট। দামোদর নদের মানাচরে ফের পোস্ত চাষ নষ্ট করল প্রশাসন ও আবগারি দফতর। বুধবার বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়া ও মেজিয়া ব্লকের পিংরুই, কুলডিহা, জালানপুরে হানা দেন আধিকারিকেরা। ছিলেন আবগারি দফতরের সুপারিন্টেন্ডেন্ট সৌম্য রায়ও। বড়জোড়ার বিডিও ইস্তেয়াক আহমেদ খান জানান, প্রায় ২০ একর জমির পোস্ত গাছ নষ্ট করা হয়েছে। তল্লাশি অভিযান চলবে।