দুবরাজপুরে সভায় বক্তব্য রাখছেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। ছবি :দয়াল সেনগুপ্ত।
সারদা-কাণ্ডে জড়িত তৃণমূল নেতাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি তুললেন সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম।
দুবরাজপুরে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে সিপিএমের তিন দিনের জেলা সম্মেলন। সম্মেলনে যোগ দিয়ে স্থানীয় মাদৃক সঙ্ঘের মাঠে প্রকাশ্য সভায় সেলিম অভিযোগ করেন, “কংগ্রেস ভেঙে যে দিন তৃণমূল হয়েছিল, সেদিন ওরা বলেছিল ‘উল্টে দিন, পাল্টে দিন’। তখনই আমরা বলেছিলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসল উদ্দেশ্য, এলোমেলো করে দে মা। লুটেপুটে খাই। আজ তৃণমূল কর্মীরা বুঝেছেন, দিদি যথেষ্ট এলোমেলো করেছেন। আর মদন-মুকুলেরা যথেষ্ট লুটেপুটে খেয়েছেন।” এর পরেই সিপিএম নেতার দাবি, “এখন শুভাপ্রসন্নের নাম শুনছেন। এ বার দোলা সেনের নাম শুনবেন। তার পর শঙ্কু পণ্ডার নাম শুনবেন। এখন খুচরো, সিবিআই পরে কড়কড়ে নোটের দিকেও এগোবে। কেউ রেহাই পাবে না। ওঁদের সকলের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে গরিব মানুষের টাকা ফেরত দিতে হবে।”
এ দিন সভায় সেলিম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নৃপেন চৌধুরী, ত্রিদীপ ভট্টাচার্য, মদন ঘোষ, জেলা সম্পাদক দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম প্রমুখ। ভিড়ে ঠাসা সমাবেশ থেকে দলকে ফের মজবুত করার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি বিজেপি ও তৃণমূলের প্রবল সমালোচনা করেন মূল তিন বক্তা দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়, নৃপেন চৌধুরী এবং মহম্মদ সেলিম। তবে, সবচেয়ে আক্রমনাত্মক ছিলেন সেলিমই। পরে সভায় তিনি ১০০ দিনের কাজ নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে গরিব মানুষকে বঞ্চনা করার অভিযোগ তোলেন। তাঁর অভিযোগ, “১০০ দিনের কাজের প্রকল্প দিল্লিতে বসে শেষ করছেন নরেন্দ্র মোদী। আর এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলাপরিষদ ও পঞ্চায়েত দখল করে দুর্নীতি করে সেই কাজ কেড়ে নিয়েছেন। কাজ করলেও মজুরি মিলছে না।” টেট, এসএসসি-তেও দুর্নীতি করে বেকার ছেলেমেয়েদের সঙ্গেও একই বঞ্চনা করা হচ্ছে বলে সেলিমের দাবি।
সভায় রাজ্যের শাসকদলকে সারদা-কাঁটায় বিঁধে ডিএ না পাওয়ার ক্ষোভকেও উস্কে দিয়েছেন সেলিম। তাঁর দাবি, “সিবিআই হিসাব দিচ্ছে, মা-মাটি-মানুষের নামে প্রতারণা করে শুধু সারদা বা রোজভ্যালিই নয়, ডজন ডজন চিটফান্ড থেকে তৃণমূলের গণ্ডাগণ্ডা মন্ত্রী এমনকী মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত কোটি, কোটি টাকা লুঠ করেছেন। সব গরিব মানুষের টাকা। যে সরকার কর্মীদের প্রাপ্য ডিএ দিতে পারে না, ভাতা দিতে পারে না, শ্রমের মূল্য দিতে পারে না, তারাই আবার তদন্ত আটকাতে চেয়েছিলেন। এঁরা কেউ-ই পার পাবেন না!”
সেলিমের দাবি উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল পাল্টা বলেন, “গত দেড় বছরে উন্নয়নের যা কাজ হয়েছে তা ৩৪ বছরেও সিপিএম করতে পারেনি। কোন মুখে ওঁদের নেতারা মিথ্যা অভিযোগ করছেন?”