টোল আদায় শুরু বক্রেশ্বরে

পর্যটকদের কথা ভেবে বক্রেশ্বর উষ্ণপ্রস্রবণকে ঢেলে সাজানো হয়েছিল আগেই। সেই সাজ অক্ষুন্ন রাখতে গরমজলের ঘাট ও গাড়ি পার্কিং-এর জন্য টোল আদায় শুরু হল বৃহস্পতিবার থেকে। জেলাপরিষদের তত্বাবধানে দরপত্র ডেকে বার্ষিক দশ লক্ষ টাকায় সেই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হল বরাত পাওয়া ঠিকাদরকে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “ওই টাকা খরচ হবে মূলত রক্ষণাবেক্ষণ এবং রাস্তাঘাট-সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে। সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা প্রয়োজন হলে তা দেবে জেলাপরিষদ।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বক্রেশ্বর শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:০৪
Share:

পর্যটকদের কথা ভেবে বক্রেশ্বর উষ্ণপ্রস্রবণকে ঢেলে সাজানো হয়েছিল আগেই। সেই সাজ অক্ষুন্ন রাখতে গরমজলের ঘাট ও গাড়ি পার্কিং-এর জন্য টোল আদায় শুরু হল বৃহস্পতিবার থেকে। জেলাপরিষদের তত্বাবধানে দরপত্র ডেকে বার্ষিক দশ লক্ষ টাকায় সেই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হল বরাত পাওয়া ঠিকাদরকে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “ওই টাকা খরচ হবে মূলত রক্ষণাবেক্ষণ এবং রাস্তাঘাট-সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে। সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা প্রয়োজন হলে তা দেবে জেলাপরিষদ।”

Advertisement

বক্রেশ্বর শতাব্দী প্রাচীন শিব-ধাম। একান্নপীঠের একপীঠ হলেও পর্যটকদের এখানে আসার মূল আকর্ষণ অবশ্যই উষ্ণ প্রস্রবণ। সেই আকর্ষণ বজায় রাখাতে উদ্যোগী হয়েছিল রাজ্য পর্যটন দফতর এবং সহযোগিতায় ছিল জেলাপরিষদ। ২০০৪ সালে রামচন্দ্র ডোমের সাংসদ কোটার ২৩ লক্ষ টাকায় নবরূপে বক্রেশ্বর গড়ে উঠে। স্নানের ঘাট থেকে শুরু করে সব কিছুর উন্নয়ন ঘটে এবং একটি ঠিকাদার সংস্থার হাতে দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতি দেখভালের দায়িত্ব দেয়। মাথা পিছু পাঁচ টাকা টিকিটের বিনিময়ে ওই ঠিকাদার সংস্থা সেখানে আশা পর্যটকদের পরিষেবা দেয়। কিন্তু সেই সৌন্দর্যায়ন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। গত তিন বছর আগে ওই ঠিকাদার সংস্থা দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। সেই সময় পর্যটকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন, দু’টি স্নানের ঘাটই সংস্কারের অভাবে নোংরা আবর্জনায় ভরে গিয়েছিল। ২০১০-১১ সালে বাম আমলের শেষ দিকে বক্রশ্বরকে পর্যটন মানচিত্রে জায়াগা দেওয়ার লক্ষ্যে পর্যটন দফতর প্রায় ২.৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। সেই কাজ শেষ হয়েছে ১৩ সালের প্রথম দিকে। তবে সেই কাজে বেশ কিছু খামতি ছিল। বিশেষ করে উষ্ণ প্রস্রবণে, বলে মত এলাকাবাসী, ব্যবসায়ী এবং বক্রেশ্বর মন্দিরের সেবাইতদের। এ বার সেই খামতি মিটেছে বলে জানিয়েছেন সেবাইত সমিতির সম্পাদক প্রকাশ চৌধুরী।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশবাবুর আশ্বাস দিয়েছিলেন, “আমরা ওই পর্যটনকেন্দ্রটিকে উন্নত করে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাছি। খুব শীঘ্রই একটি এজেন্সির হাতে ওই পর্যটন কেন্দ্রটি দেখাভালের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে। আগের মতো টিকিট ব্যাবস্থা চালু থাকবে। এজেন্সির কাছে থেকে টাকা নিয়ে এলাকার সংস্কার এবং উন্নয়ন করা হবে।” সেই কাজ শুরু হল বৃহস্পতিবার থেকে। এই খাতে বরাদ্দ ৪৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নীল-সাদা রঙের ঝকঝকে টাইলসে উষ্ণ প্রস্রবণকে দারুণ ভাবে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে কিছুদিন আগেই। যে গরম জলে স্নান করতে এসে জলে ভাসমান শ্যাওলা ও নোংরা দেখে হতাশা প্রকাশ করতেন পর্যটকেরা, সেই চিত্র এখন পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। স্নানের জন্য থাকা গরম জলের কুণ্ডগুলি থেকে নোংরা জল নিকাশের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি নীচে ৬ ইঞ্চি ঢালাই দিয়ে তারপর নতুন নুড়ি পাথর দেওয়া হয়েছে। আগে নোংরা জল বের করার সমস্যা ছিল। সেই সঙ্গে সৌন্দর্যায়নের জন্য টালি বসানো ও রং করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বক্রেশ্বর মহাশ্মশান ও উষ্ণপ্রস্রবণ সংলগ্ন রাস্তায় পথবাতি জ্বলত না। প্রায় ১২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সৌর বিদ্যুতের পথবাতি লাগিয়ে সেই সমস্যাও মিটিয়েছে জেলাপরিষদ।

Advertisement

কিন্তু একটা প্রশ্ন থাকছিলই, সব কিছুই তো হল। এগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক মতো হবে তো? টোল আদায় শুরু হওয়ার পর সেই সমস্যা আর হবে না বলেই মনে করছেন বক্রেশ্বর সেবাইত সমিতির সম্পাদক প্রকাশ চৌধুরী-সহ এলাকার অনেকেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement