এ ভাবেই দীর্ঘদিন ধরে ভেড়ে পড়ে রয়েছে শাল নদীর উপর থাকা ভাসাপুল। ছবি: বিশ্বজিত্ রায়চৌধুরী
গত বর্ষার সময় ভেঙে গিয়েছিল বিলাতি পঞ্চায়েতের শাল নদীর গোলটের ভাসা সেতু। চার মাস পেরিয়ে গেলেও, কার্যত কোনও সংস্কার হইনি সেতুর। ফলে বিপদজ্জনক ভাবে যান চলাচল করছে সেই ভাঙা সেতু দিয়েই। এতে যে কোনও সময়ে বড় সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা।
ইলামবাজার থানার বিলাতি পঞ্চায়েতের গোলটের ভাসা সেতু প্রায় দুই দশকের পুরনো। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই সেতু নির্মাণের সময়ে নিম্ন মানের মালমশলা ব্যবহার করা হয়েছিল। তার ফলেই কয়েক লক্ষ টাকার ওই সেতু, তৈরির মাত্র কুড়ি বছরের মধ্যে ভেঙে পড়ল। স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বর্ষার মরসুমে ভাসা সেতুর ওপর কয়েকটি জায়াগায় ফাটল দেখা দেয়। স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আনেন বাসিন্দারা। চলতি বছর অগস্ট মাসের চার তারিখ (০৪/০৮/১৪) সকালে সেতুটি ভেঙে যায়। ফলে ওই রাস্তার ওপর নির্ভরশীল বহু থানা এলাকার মানুষজন বিপাকে পড়েন।
তৃণমূলের ইলামবাজার ব্লক সভাপতি তথা বীরভুম জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ জাফারুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই সেতু সংস্কারের আশ্বাস দেন। কিন্তু ওই সেতু সংস্কারে হাত দেয়নি জেলা পরিষদ। জানা গিয়েছে, ইলামবাজার ও পাড়ুই থানার বেশ কিছু এলাকার বাসিন্দারা হাঁসড়া স্কুল মোড় থেকে ইলামবাজার রাস্তা ব্যবহার করেন। হাঁসড়ার বাসিন্দা কামরুল হক, শেখ শ্যামচাঁদ, আমিনা বিবিদের ক্ষোভ, দীর্ঘ দিন ধরে ওই সেতু সংস্কার না হওয়ায় ওই সেতুর ওপর দিয়ে কোনও ভারী যান চলাচল করতে পারে না। হালকা যান চলাচলের ক্ষেত্রেও একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। অবিলম্বে ওই সেতু সংস্কারের জন্য তাঁরা সংশ্লিষ্ট জায়গায় আর্জি জানিয়েছেন। ওই রাস্তা দিয়ে হাঁসড়া, মাখড়া, চৌমণ্ডলপুর, গোরাপাড়া, ছাতারবান্দি, প্রভৃতি এলাকার মানুষ বাজার হিসেবে ইলামবাজার ওপর নির্ভরশীল।
সেতুর ওপারের এবং গোলটে বাসিন্দারা লাগোয়া বোলপুর ও সিউড়ি যাওয়ার ক্ষেত্রেও ওই একই পথ ধরে আসা যাওয়া করেন। ফলে নির্ভরযোগ্য এমন একটি সেতু ভেঙে পড়ায়, যে কোনও সময় বিপদের আশঙ্কা করছেন তাঁরা। বীরভূম জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইলামবাজার থানার ওই সেতু সংস্কারের জন্য ৪৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ইতিমধ্যেই হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় ব্লক নেতৃত্ব এবং বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ওই সেতু সংস্কারে অহেতুক টাকা খরচ না করে, নতুন সেতু নির্মাণের। তৃণমূলের ইলামবাজার ব্লক সভাপতি তথা বীরভূম জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ জাফারুল ইসলাম বলেন, “ওই সেতু সংস্কারে বীরভূম জেলা পরিষদ উদ্যোগী হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলা পরিষদ অনুদান বরাদ্দ করেছেন। পাশাপাশি ওই সেতুর পাশে একই রকম ভাসা সেতু কাঠামোর নতুন সেতুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেতু সংস্কার চলতি মাসের শেষে শুরু হওয়ার কথা।”
জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, কলকাতার একটি সংস্থা প্রয়োজনীয় মাপজোক করে গিয়েছে। তাঁদের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিয়ম মেনে সেতুর কাজ শুরু হবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী বলেন, “ইতিমধ্যেই আমরা ডি পি আর পাঠিয়েছি। তবে অস্থায়ী ভাবে ভাসা সেতু দ্রুত সংস্কার করা হবে।”