বধূ ও পাঁচ বছরের এক শিশুপুত্রকে খুনের অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে মুরারই থানার ননগড় গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানায়, নিহতদের নাম সাথী হালদার (২৫) এবং সাহেব হালদার (৫)। বাড়ি ননগড় গ্রামেই। বধূর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁর শ্বশুর এবং শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার পর থেকেই অবশ্য বধূর স্বামী পালিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর সাতেক আগে নলহাটির পাইকপাড়া গ্রামের বিকাশ হালদারের বড় মেয়ে সাথীর ননগড়ের ছবি হালদারের ছেলে উপলের বিয়ে হয়েছিল। দম্পতির দুই ছেলের বড় সাহেব। দ্বিতীয় ছেলের বয়স মাত্র দুই। বিকাশবাবুদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই সাথীর উপর জামাই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো শুরু করেন। তাতে শ্বশুর এবং শাশুড়ির মদতও ছিল। বিকাশবাবু বলেন, “ছেলেদের মুখ চেয়ে মেয়ে সব সহ্য করত। শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মাস দেড়েক আগেও বাড়িতে চলে এসেছিল। মেয়েকে বুঝিয়ে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে ছিলাম।” এ দিন সকাল পৌনে ৮টা নাগাদ ননগড় গ্রাম থেকে তাঁর এক ভাগ্নে মেয়ে-নাতির মৃত্যুর খবর দেন। পুলিশ জানায়, স্থানীয় এক বাসিন্দার কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ উপলদের বাড়ি থেকে দেহ দু’টি উদ্ধার করে। মা ও ছেলে উঠোনে নিথর হয়ে পড়েছিলেন। বিকাশবাবু বলেন, “খবর পেয়ে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দেখি জামাই, মেয়ের শ্বশুর, শাশুড়ি কেউ নেই। পুলিশ মেয়ে ও নাতির মৃতদেহ পাইকর ফাঁড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। ছোট নাতিকেও খুঁজে পাইনি।” তাঁর দাবি, শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই মেয়ে আর নাতিকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে।
ওই ঘটনায় মেয়েটির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বধূ নির্যাতন ও খুনের মামলা রুজু করেছে। এসডিপিও (রামপুরহাট) কোটেশ্বর রাও বলেন, “ময়না-তদন্তের রিপোর্ট ছাড়া বলা যাবে না, কীভাবে ওই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই বধূর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” এ দিকে, পুলিশ জানিয়েছে, সাথীদেবীর ছোট ছেলে আপাতত তাঁর বড় জায়ের কাছে আছে। এ দিন দুপুরে অভিযুক্ত উপলকে মোবাইলে ধরা হলেও তিনি কথা না বলে কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে দেন।
অন্য দিকে, এ দিনই ইলামবাজার থানা এলাকাতেও এক বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ মৃতার শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম তপুরানি চক্রবর্তী (২৩)। বাড়ি স্থানীয় কামারপাড়া গ্রামে। এ দিন পুলিশ ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে। পরে ওই বধূর বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বধূ নির্যাতন এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ মৃতার শাশুড়িকে গ্রেফতার করে। স্বামী-সহ বাকিরা পলাতক। পুলিশ তাঁদের খুঁজছে। পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে।