কাজ না পেয়ে ভাতা চেয়ে আর্জি যুবকের

তৃণমূল না করলে পঞ্চায়েত তাঁকে কাজ দেবে না বলেছিল, এমনই অভিযোগ ছিল এক প্রতিবন্ধী যুবকের। একশো দিনের প্রকল্পে বারবার কাজের আবেদন জানিয়েও কাজ না পেয়ে এ বার ভাতার দাবিতে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন সেই যুবক। হুড়া ব্লকের দলদলি পঞ্চায়েত এলাকা র কুসুমজোড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সামন্ত মাহাতো নামে ওই যুবকের অভিযোগ, তাঁর গ্রামে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে পুকুর সংস্কারের কাজ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সংসদ এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় বারবার কাজের আবেদন করেও পঞ্চায়েত তাঁকে কাজ দেয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৪ ০০:৪০
Share:

তৃণমূল না করলে পঞ্চায়েত তাঁকে কাজ দেবে না বলেছিল, এমনই অভিযোগ ছিল এক প্রতিবন্ধী যুবকের। একশো দিনের প্রকল্পে বারবার কাজের আবেদন জানিয়েও কাজ না পেয়ে এ বার ভাতার দাবিতে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন সেই যুবক।

Advertisement

হুড়া ব্লকের দলদলি পঞ্চায়েত এলাকা র কুসুমজোড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সামন্ত মাহাতো নামে ওই যুবকের অভিযোগ, তাঁর গ্রামে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে পুকুর সংস্কারের কাজ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সংসদ এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় বারবার কাজের আবেদন করেও পঞ্চায়েত তাঁকে কাজ দেয়নি। যে যে দিনগুলিতে ওই প্রতিবন্ধী যুবক পঞ্চায়েতের কাছে কাজ চাইতে গিয়েছিলেন, সেই দিনগুলির উল্লেখ করে সামন্তর আবেদন, তাঁকে ভাতা দেওয়া হোক। সামন্ত বলেন, “আমি কাজ চাইতে গিয়েছিলাম। অথচ পঞ্চায়েত আমাকে কাজ দেয়নি। তাই বিধি মোতাবেকই আমি ভাতা পাব। সেই দাবিই প্রশাসনের কাছে জানিয়েছি।”

প্রতিবন্ধী এই যুবকের পক্ষে হাঁটাচলা করা কষ্টকর হলেও গ্রাম থেকে পুরুলিয়া সদরে এসে পুরুলিয়া জেলা পরিষেদের সভাধিপতি এবং জেলাশাসকের কার্যালয়ে তাঁর আবেদন জমা দিয়ে গিয়েছেন এই যুবক। তৃণমূল না করলে পঞ্চায়েত কাজ দেবে না, এর আগে জেলাশাসকের কাছে সরাসরি এই মর্মেই লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন সামন্ত। তাঁর অভিযোগের তির ছিল পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান প্রভাসচন্দ্র বাউরি অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছিলেন, তিনি প্রধানের চেয়ারে বসে এ রকম কথা কাউকে বলতে পারেন না। তা হলে একাধিক বার কাজ চাওয়া সত্ত্বেও ওই যুবক কাজ পাননি কেন, তার কোনও সদুত্তর অবশ্য সে সময় প্রধানের কাছ থেকে মেলেনি।

Advertisement

সামন্তর কথায়, “হুড়ার বিডিও সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে আমাকে দেখা করতে বলেছিলেন। কিন্তু, আমার কাজের আবেদনে যেহেতু পঞ্চায়েত প্রধান স্বাক্ষর করেননি, তাই তিনিও আমার ভাতার আবেদন নিতে রাজি হননি।” তাঁর প্রশ্ন, প্রধান কাজ চাওয়ার আবেদনই গ্রহণ করেননি। তা হলে কী ভাবে তিনি তাঁর আবেদনে স্বাক্ষর করবেন? “এই অবস্থায় এক জন প্রতিবন্ধী শ্রমিক হিসেবে প্রশাসনিক কর্তা ছাড়া আমি আর কার কাছে যাব? তাই জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও জেলাশাসকের অফিসে আমার ভাতার আবেদন জমা দিয়েছি।”সোমবার বলেন সামন্ত।

ওই যুবকের কাছে আবেদন পাওয়ার পরে জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো তাঁকে আশ্বাস দেন, “আমি দেখব, যাতে আপনি কাজ পান। তা ছাড়া, কোথায় সমস্যা রয়েছে, তা-ও দেখব।” গত ৩১ জুলাই জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় বলে গিয়েছেন, মানুষকে একশো দিনের প্রকল্পে কাজ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনও রং দেখা যাবে না। বিশেষ পরিস্থিতিতে এই প্রকল্পে যন্ত্র ব্যবহার করার প্রসঙ্গ তুলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই বৈঠকেই ধমকও খেতে হয়েছিল জেলার এক তৃণমূল নেতাকে। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পে মানুষকে কাজ দেওয়ার উপরে জোর দেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে সামন্তর বক্তব্য, “এর পরেও আমি কাজ পাব না কেন?”

প্রশ্নটা মোটেও অন্যায্য নয়। এ বার কাজের অপেক্ষায় সামন্ত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement