একশো দিন কাজের দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তকারী এক পঞ্চায়েত আধিকারিককে ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল বারিকুল থানার ওসি-র বিরুদ্ধে। রাইপুরের বিডিও দীপঙ্কর দাস বৃহস্পতিবার দুপুরে বাঁকুড়ার জেলাশাসককে মোবাইল ফোনে এসএমএস করে ওই অভিযোগ জানিয়েছেন। যদিও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বারিকুলের ওসি সলিল পাল দাবি করেছেন, “রাইপুর ব্লকের পঞ্চায়েত আধিকারিকই আমাকে ফোন করেছিলেন। আমি তাঁকে হুমকি দিতে যাব কেন? ফোনের ‘কল লিস্ট’ পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে যে অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা।”
বাঁকুড়ার জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, “রাইপুরের বিডিও এসএমএস করে আমার কাছে অভিযোগ করেছেন ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তকারী ব্লক পঞ্চায়েত উন্নয়ন আধিকারিককে পুলিশের এক আধিকারিক হুমকির সুরে কথা বলেছেন। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলব।”
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, রাইপুর ব্লকের ফুলকুসমা পঞ্চায়েত এলাকায় একটি ক্লাবের জমি সমান করার কাজ হয়েছিল ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে। ওই কাজের জন্য ২৪ লক্ষ ৪৭ হাজার ৫৩৩ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। অভিযোগ ওই কাজে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। বিভাগীয় তদন্তের পর বিডিও গত ২ মে ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান গোবিন্দপ্রসাদ মুর্মু, নির্মাণ সহায়ক নীলরতন বিশ্বাস, গ্রাম রোজগার সেবক রাহুল সেনাপতি, সুপারভাইজর অলক মণ্ডলের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। সে দিনই পুলিশ প্রধান বাদে অভিযুক্ত তিন কর্মীকে গ্রেফতার করে। ধৃতেরা বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন। কিন্তু ওই পঞ্চায়েত প্রধান এখনও পুলিশের কাছে অধরা।
রাইপুরের বিডিও দীপঙ্কর দাস জানান, ফুলকুসমা পঞ্চায়েতের ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করেছেন ব্লকের পঞ্চায়েত উন্নয়ন আধিকারিক তনয় মুখোপাধ্যায়। বুধবার বিকেলে তনয়বাবুকে ফোনে হুমকি দেন বারিকুল থানার ওসি। তনয় মুখোপাধ্যায় অবশ্য অন্য কথা বলেছেন। তাঁর দাবি, “ওই মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে বারিকুলের ওসি-কে ফোন করেছিলাম। তিনি আমাকে সব রকম তথ্য দিয়েছেন। মামলাটি নিয়ে তিনি বিডিও-র সম্পর্কে কিছু আপত্তিকর কথা বলেছেন। তবে হুমকি দেননি।”
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের মোবাইলে এ দিন বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস করা হলেও উত্তর মেলেনি। তবে জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, “ফুলকুসমা পঞ্চায়েতের ওই কাজের দুর্নীতির অভিযোগের যে এফআইআর বিডিও করেছিলেন, তাতে কিছু ত্রুটি ছিল। সে জন্যই তদন্তকারী আধিকারিককে থানার ওসি বিষয়টি বুঝিয়ে বলেন। বিডিও বিষয়টিকে অন্যভাবে নেওয়ায় ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।”