কখনও সিলিং ফ্যান, পড়ুয়াদের থালা-বাসন, স্কুলের আসবাবপত্র। কখনও মিড-ডে মিল রান্না করার যাবতীয় সরঞ্জাম-সহ শিক্ষক-শিক্ষকাদের জল খাবারের সরঞ্জাম চুরি হয়েছে। এক বার নয়, এক বছরের মধ্যে চার চার। বোলপুরের সুরুল নিম্নবুনিয়াদি স্কুলে এই ঘটনায় তিতিবিরক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে অভিভাবক সকলেই। অবিলম্বে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার সকালে অভিভাবকদের একাংশ পথ অবরোধ শুরু করেন। কিছুক্ষণের জন্য পথ অবরোধ হলেও তাতে সামিল হয়েছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়াদের একাংশ। অবস্থা বেগতিক বুঝে অবিলম্বে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয় পুলিশ। তার পরেই সাময়িক ভাবে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুরুল ফাঁড়ির কাছে শ্রীনিকেতনের মুখ্য বাজার এলাকায় চতুর্থ পর্যন্ত পঠনপাঠনের জন্য রয়েছে সুরুল নিম্নবুনিয়াদি বিদ্যালয়। ওই স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে প্রায় ১৫৫ জন পড়ুয়া রয়েছে। অন্য বছরের মতো এ বারও গরমের কারণে পয়লা এপ্রিল, মঙ্গলবার থেকে সকালে পঠনপাঠনের ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এ দিন সকাল ৬.২০ মিনিট নাগাদ পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুলে পৌঁছন। ঘর খুলতে গিয়ে দেখেন, এক দিকের দরজার একটা অংশ নেই। অন্য অংশে তালা ঝোলানো রয়েছে। অভিভাবকদের কথায়, “ভেবেছিলাম হয়তো শিক্ষক-শিক্ষিকারা ‘এপ্রিল ফুল’ করার জন্য বিদ্যালয়ে চুরি হয়েছে বলে খবর দিয়েছেন। কিন্তু স্কুলে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ। স্কুলে যা কিছু ছিল সব চুরি হয়ে গিয়েছে।” চুরির খবর চাউর হতেই, একে একে অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন স্কুল চত্বরে। স্কুলটি বাজার এলাকার কাছে হওয়ায়, অভিভাবক ছাড়াও বহু লোকজন ভিড় জমান স্কুল চত্বরে। বার বার চুরির ঘটনার প্রতিবাদে সকাল ৯টা নাগাদ বোলপুর-ইলামবাজার ও বোলপুর-সিউড়ি সড়ক শ্রীনিকেতন মোড়ে অবরোধ শুরু হয়। প্রধান শিক্ষিকা শোভা বন্দ্যোপাধ্যায় চক্রবর্তী বলেন, “থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এ বার ১৫৫টি থালা, ৫টি সিলিং ফ্যান-সহ রান্নার সরঞ্জম চুরি হয়েছে।”
কিন্তু একই স্কুলে বার বার কেন চুরি হচ্ছে? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্কুলের এক শিক্ষিকা রুমা সরকার বলেন, “তহবিল ছাড়াও, উন্নয়নের জন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের স্থানীয় শাখা আসবাবপত্র, পাখা দিয়েছিল। একটি ক্লাবের পক্ষ থেকে পড়ুয়াদের জন্য থালার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সব চুরি হয়ে গিয়েছে। পুলিশ অবিলম্বে চুরির কিনারা করুক।” বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।