ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামার (এনএসডি) উদ্যোগে বীরভূমের ইলামবাজারের দ্বারোন্দায় শুরু হয়েছে ‘আদিবিম্ব’ উৎসব। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
আদিবাসী সম্প্রদায়ের নাচ, গান এবং সমকালীন থিয়েটার নিয়ে তিন দিনের উত্সব শুরু হয়েছে ইলামবাজারের দ্বারোন্দায়। তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই এই উত্সবের আয়োজন করেছে নয়াদিল্লির জাতীয় নাট্য বিদ্যালয়।
রবিবার বিকেলে এই উত্সবের উদ্বোধন করেন পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের অধিকর্তা ওমপ্রকাশ ভারতী। উদ্যোক্তারা জানান, দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ১৬টি দল এই উত্সবে যোগ দিয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অরুণাচল প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম-সহও একাধিক রাজ্যের আদিবাসী সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন শিল্পীরা। বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে আলোকচিত্র প্রদর্শনীও। সেখানে স্থান পেয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের আদিবাসীদের পারম্পরিক পোশাক, তাঁদের বাদ্যযন্ত্রের ছবি। ভারতীয় মানব বিজ্ঞান সর্বেক্ষণের কলকাতা দফতরের স্টলে পূর্ব ভারতের আদিবাসী মুণ্ডা, ওরাং, সাঁওতালদের জীবনযাত্রার নানাও আলোকচিত্রও রয়েছে। সিকিমের হিমালয়ান হেরিটেজ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির স্টলে দেখা যাচ্ছে ভারতের আদিবাসী সংস্কৃতির ওপর নানা আলোকচিত্র। বীরভূমের ব্লসম থিয়েটারের স্টলে তুলে আনা হয়েছে এই জেলার আদিবাসীদের বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র। সেই সঙ্গে সাঁওতালদের নানা ধর্মীয় উত্সব, আলপনা, নাচের আলোকচিত্র।
এ দিনই মঞ্চস্থ হয়েছে ওড়িশার চেতনা নাট্যগোষ্ঠীর সুবোধ পট্টনায়েকের বিখ্যাত নাটক ‘ধোঁয়া’। অনুষ্ঠানে হাজির ন্যাশানাল স্কুল অব ড্রামার চেয়ারম্যান রতন থিয়াম বলেন, “বিশ্বায়নের যুগে ছোট ছোট জাতি, উপজাতি হারিয়ে যাচ্ছে। তাঁদের এবং তাঁদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখাই এই উত্সবের অন্য একটি উদ্দেশ্য। এই সাঁওতাল অধ্যুষিত এলাকার একটা পরিবেশ এবং নিজস্ব চরিত্র রয়েছে। এখানকার মানুষ ওই সংস্কৃতি এবং পরিবেশকে ধরে রেখেছে। তাই এই এলাকা এমন একটি উত্সবের আদর্শ জায়গা।” তিনি জানান, উত্সবে বিভিন্ন প্রদেশের শিল্পীরা একে অপরের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারছেন। সংস্কৃতির আদান প্রদানও হচ্ছে।
এনএসডি-র উদ্যোগে চলা ‘আদিবিম্ব’ নামের তিন দিনের এই উত্সবকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ওমপ্রকাশ ভারতী। প্রথমে এই উত্সবের উদ্বোধন করার কথা ছিল নাট্য ব্যাক্তিত্ব তথা সাংসদ অর্পিতা ঘোষের। জরুরি কাজে আটকে পড়ায় তিনি আসতে পারেননি। উত্সবের আঞ্চলিক কো-অর্ডিনেটর পার্থ গুপ্ত বলেন, “জাতীয় নাট্য বিদ্যালয় নয়াদিল্লির এই উদ্যোগে বীরভূম জেলা তথা এই এলাকা সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটি ক্ষেত্র হয়ে উঠছে।”