খয়রাশোল

অশোক মুখোপাধ্যায় খুনে ধৃত ভাড়াটে খুনি

খয়রাশোলের তৃণমূল নেতা অশোক মুখোপাধ্যায় খুনের ঘটনায় জড়িত পাঁচ ভাড়াটে খুনির মধ্যে চার জনকে মাস খানেক আগেই গ্রেফতার করতে পেরেছিল পুলিশ। সেই দলের পঞ্চম সদস্য বিজেন্দ্র দাস ধরা পড়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার পটনার মালসালামি থানা এলাকার নয়াটোলা থেকে ধরা হয় বিজেন্দ্রকে। তারপর পটনা আদালত থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে খয়রাশোল থানা আনা হয় শুক্রবার ভোরে। এ দিনই পুলিশি হেফাজত চেয়ে ধৃতকে দুবরাজপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক সাত দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৩৪
Share:

দুবরাজপুর আদালতে বীজেন্দ্র। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

খয়রাশোলের তৃণমূল নেতা অশোক মুখোপাধ্যায় খুনের ঘটনায় জড়িত পাঁচ ভাড়াটে খুনির মধ্যে চার জনকে মাস খানেক আগেই গ্রেফতার করতে পেরেছিল পুলিশ। সেই দলের পঞ্চম সদস্য বিজেন্দ্র দাস ধরা পড়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার পটনার মালসালামি থানা এলাকার নয়াটোলা থেকে ধরা হয় বিজেন্দ্রকে। তারপর পটনা আদালত থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে খয়রাশোল থানা আনা হয় শুক্রবার ভোরে। এ দিনই পুলিশি হেফাজত চেয়ে ধৃতকে দুবরাজপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক সাত দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করছেন।

Advertisement

গত ১৬ অগস্ট রাত ৮টা ২০ মিনিট নাগাদ বাড়ির মনসাপুজোর ফল কিনতে বেরিয়ে বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন তৃণমূলের খয়রাশোলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অশোক মুখোপাধ্যায়। দু’টি মোটরবাইকে পাঁচ জন দুষ্কৃতী ওই হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ওই খুন, না কি অবৈধ খয়লা সাম্রাজের দখলদারি নিয়ে বিরোধ, না খুনের পাল্টা খুন এই নিয়ে প্রথম দিকে পুলিশের সংশয় থাকলেও কিছু দিন পর থেকেই মূলত তদন্তে নেমে দু’টি বিষয় মাথায় রেখেছে পুলিশ। এক: বদলার খুন, দুই: খয়রাশোলের বিপুল কয়লা সাম্রাজ্যের দখলদারি নিয়ে দুই বিবাদমান গোষ্ঠীর লড়াই।

প্রসঙ্গত, গত বছর অগস্টে খুন হয়েছিলেন খয়রাশোলের তৃণমূল নেতা অশোক ঘোষ। এ বার সেই অগস্টেই খুন হন তৃণমূল নেতা অশোক মুখোপাধ্যায় (যিনি অশোক ঘোষ খুনে অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন)। তাই প্রথম থেকেই পাল্টা খুনের তত্ত্বে বিশ্বাস করে তদন্ত এগিয়েছে পুলিশ। তাই নিহত নেতার পরিবারের তরফে করা মোট ৪৪ জনের নামে লিখিত অভিযোগ করা হলেও অভিযুক্তদের দীর্ঘ তালিকা কিংবা তড়িঘড়ি তাঁদের গ্রেফতারির রাস্তায় যায়নি। যেহেতু তৃণমূলেরই নেতা-কর্মীদের নাম জড়িয়েছিল (যাঁদের হাতেই রাশ ছিল খয়রাশোল ব্লকের) তাই যথেষ্ট সাবধানী হয়ে পা ফেলেছে পুলিশ। ১৬ অগস্ট খুনের পর পুলিশ প্রথম ১০ সেপ্টেম্বর আব্দুর রহমান, আশিস ঘোষ এবং কিশোর মণ্ডল নামে তিন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যাঁদের নাম অভিযুক্তদের তালিকায় ছিল। ধৃতদের জেরা করে ১৫ সেপ্টেম্বর বিশ্বরূপ চট্টোপাধ্যায় ও গত ২৭ সেপ্টেম্বর স্বপন সেন, হাবুল শেখ, লখাই (লক্ষ্মীকান্ত) পাল, কেদার আলি এবং শেখ সইবুল নামে দলেরই আরও পাঁচ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রত্যককে জেরা করে ভাড়টে খুনি দলের সদস্যদের নাম জনতে পারে পুলিশ। তারপর গত ১১ অক্টোবর চার ভাড়াটে খুনী বাবলু শর্মা, পাপু ওরফে অঞ্জু সাহু, বহারুদ্দিন শেখ এবং দিলীপ কুমারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ছিল প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার বরাতে সুপারি কিলারদের কাজে লাগানো হয়েছিল ওই তৃণমূল নেতা খুনে।

Advertisement

জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়াও জানিয়েছিলেন, সুপারি কিলারদের দিয়ে ওই খুন করানো হয়েছে এবং ভাড়াটে খুনিদের সুপারি দিয়েছিলেন দীপক ঘোষ (নিহত অশোক ঘোষের ভাই)। বিজেন্দ্রকে গ্রেফাতার করার পর সেই বৃত্ত সম্পূর্ণ হল বলে মনে করছে পুলিশ। তবে কাজ এখনও শেষ নয়। অশোক মুখোপাধ্যায় খুনে এখনও পর্যন্ত মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হলেও নিহতের পরিবার ও পুলিশ যাঁকে মূল ষড়যন্ত্রী বলে ধরছে সেই দীপক ঘোষকে এখনও গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement