অনাস্থায় হার বাম প্রধানের

কংগ্রেস ও নির্দলের সমর্থন নিয়ে জোটবদ্ধ ভাবে বামফ্রন্ট প্রধানকে অপসারিত করল তৃণমূল। সোমবার মাড়গ্রাম থানার কালুহা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় নিজের ক্ষমতা জাহির করেছিল এলাকার প্রভাবশালী একসময়ের সিপিএম নেতা হাফিজ খান। পরে সিপিএম ছেড়ে নির্দল হিসাবে নিজের গ্রাম তপনে তিনজন পঞ্চায়েত সদস্যকে নির্দল হিসাবে জয়ী করতে সক্ষম হন হাফিজ খান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৫৫
Share:

কংগ্রেস ও নির্দলের সমর্থন নিয়ে জোটবদ্ধ ভাবে বামফ্রন্ট প্রধানকে অপসারিত করল তৃণমূল। সোমবার মাড়গ্রাম থানার কালুহা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা।

Advertisement

পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় নিজের ক্ষমতা জাহির করেছিল এলাকার প্রভাবশালী একসময়ের সিপিএম নেতা হাফিজ খান। পরে সিপিএম ছেড়ে নির্দল হিসাবে নিজের গ্রাম তপনে তিনজন পঞ্চায়েত সদস্যকে নির্দল হিসাবে জয়ী করতে সক্ষম হন হাফিজ খান। তাঁর মধ্যে নিজের ভাইয়ের স্ত্রী জয়ী হন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে কালুহা পঞ্চায়েতের অধীন তপন গ্রামে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় জয়ী হয় তিনজন নির্দল সদস্যও। ১৬ সদস্যের কালুহা পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় দলগত অবস্থান ছিল কংগ্রেস ৪, সিপিএম ৪, তৃণমূল ৪, নির্দল ৪। প্রধান নির্বাচনের সময় বামফ্রন্টের ৪ সদস্যকে নির্দলের তিন সদস্য সমর্থন করেন। প্রধান হন বামফ্রন্টের শরিক দল আর সি পি আই দলের মালেকা বিবি। উপপ্রধান হন নির্দলের খুকু উন্নেষা বিবি।

লোকসভা নির্বাচনের আগে তপন গ্রামের তিনজন নির্দল সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। ২৬ অগষ্ট প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তৃণমূল এবং কংগ্রেসের চার জন করে আট জন সদস্য। তাঁদেরকে সমর্থন করেন নির্দলের তিন সদস্য। সোমবার কালুহা পঞ্চায়েতে অনাস্থার পক্ষে বিপক্ষে ভোট হয়। সেখানে প্রধানের বিরুদ্ধে যে ১১ জন সদস্য অনাস্থা এনেছিল, তাঁরা জয়ী হন। রামপুরহাট ২ ব্লকের বিডিও সৌমনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “১৬ জন সদস্য উপস্থিত ছিল। তাঁদের মধ্যে ১১ জন প্রধান অপসারণের পক্ষে ভোট দেন। বাকি ৫ জন প্রধানের পক্ষে ছিল। বিডিও জানান সদস্যদের সংখ্যাধিক্যর ভোটে প্রধান অপসারিত হয়েছেন। খুব দ্রুত নতুন প্রধান নির্বাচিত করা হবে।” অপসারিত প্রধানের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

Advertisement

অন্য দিকে, হাইকোর্টের নির্দেশে সালানপুর ব্লকের বাসুদেবপুর-জেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধানের পদ দখল করেছে তণমূল। সোমবার এই পদের দায়িত্বভার নিয়েছেন রিঙ্কু বাউরি। এর ফলে, এই পঞ্চায়েতের প্রধান পদ নিয়ে বছরখানেক ধরে চলা অচলাবস্থার অবসান হল। গত পঞ্চায়েত ভোটে ১১ আসনের এই পঞ্চায়েতে সিপিএম এবং তৃণমূলদু’পক্ষই পাঁচটি করে আসন দখল করে। একটি আসন পায় কংগ্রেস। গত বছর ২৩ অগস্ট পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচনের দিন ছিল। এখানকার প্রধানের পদটি তফসিলি জাতির মহিলা প্রার্থীর জন্য সংরক্ষিত। সেই দিন ব্লক প্রশাসনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে প্রধান নির্বাচনের জন্য হাজির হন তৃণমূল এবং সিপিএমের সদস্যেরা। প্রধান পদের জন্য সিপিএমের কবিতা বাউরি ও তৃণমূলের রিঙ্কু বাউরি মনোনয়ন জমা দেন। প্রশাসনের প্রতিনিধি দুই প্রার্থীকেই তফসিলি জাতির শংসাপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। সিপিএম প্রার্থী তা জমা দিতে পারলেও তৎক্ষণাত তা জমা করতে পারেননি তৃণমূল প্রার্থী। ওই শংসাপত্র বাড়িতে রেখে এসেছেন জানিয়ে সেটি আনার জন্য সময় চান তিনি। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল প্রার্থীকে সময় দেওয়ার পরেও তিনি নির্দিষ্ট সময়ে তা এনে হাজির করতে পারেননি। সেই পরিস্থিতিতে ব্লক প্রশাসনের তরফে সিপিএম প্রার্থীকে প্রধান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তার পরেই বিক্ষোভ শুরু করেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁরা দাবি করেন, এই প্রধান নির্বাচন বেআইনি। তা বাতিল করে ফের নির্বাচন করতে হবে। গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিডিও প্রশান্ত মাইতি উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement