আরজি কর-কাণ্ডের পর নির্যাতিতার জন্য বিচার এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার দাবি ডাক্তারদের আন্দোলন। —ফাইল চিত্র।
চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য পৃথক ভাবে কোনও কেন্দ্রীয় আইনের প্রয়োজন নেই। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া রিপোর্টে এ কথা জানিয়েছে জাতীয় টাস্ক ফোর্স। আরজি কর মামলায় স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপের পর হাসপাতালে চিকিৎসক এবং অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি জাতীয় টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। টাস্ক ফোর্সের মতে, এই বিষয়টির জন্য ভারতীয় ন্যায় সংহিতা এবং রাজ্যস্তরে আইনগুলিই যথেষ্ট।
জাতীয় টাস্ক ফোর্স জানিয়েছে, প্রতিদিনের ছোটখাটো অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার জন্য রাজ্য স্তরে আইনের পর্যাপ্ত ধারা রয়েছে। এ ছাড়া গুরুতর অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার জন্য ভারতীয় ন্যায় সংহিতা রয়েছে। তাই স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য আলাদা কোনও কেন্দ্রীয় আইনের প্রয়োজন নেই। টাস্ক ফোর্সের মতে, কোনও রাজ্যের আইন অনুসারে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে, ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় তা নিশ্চিত হবে।
সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া রিপোর্টে জাতীয় টাস্ক ফোর্স আরও জানিয়েছে, ২৪টি রাজ্যে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আইন রয়েছে। আরও দু’টি রাজ্যে এই বিষয়ে বিল পেশ হয়েছে। প্রসঙ্গত, আরজি করের ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ‘অপরাজিতা মহিলা ও শিশু (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন সংশোধনী) বিল, ২০২৪’ পাশ হয়েছে। ওই বিলে ধর্ষণের সাজা হিসাবে জরিমানা-সহ আমৃত্যু কারাবাস অথবা মৃত্যুদণ্ডের কথা বলা হয়েছে। বিলটি বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর তা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তিনি সেটি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে পাঠিয়েছেন বিবেচনার জন্য।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য বেশ কিছু প্রস্তাবও রিপোর্টে উল্লেখ করেছে জাতীয় টাস্ক ফোর্স। যেমন, প্রশিক্ষিত নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করার কথা বলা হয়েছে। হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি কোন অঞ্চলে রয়েছে, কী সুযোগ-সুবিধা রয়েছে— সেই সব বিবেচনা করে রাতের শিফ্টের জন্য একটি নিরাপত্তাবিধি তৈরি করা প্রয়োজন বলে মনে করছে জাতীয় টাস্ক ফোর্স। দরকার হলে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের রাতে হাসপাতালে যাতায়াতের ব্যবস্থাও কর্তৃপক্ষকে দেখতে হবে বলে মত টাস্ক ফোর্সের। রাতে হাসপাতালের কোনও অঞ্চলে কে প্রবেশ করতে পারবেন, কে পারবেন না— তা-ও নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।