জেলাশাসকের নির্দেশ

অনাস্থার সভা স্থগিত

হিড়বাঁধ ব্লকের মলিয়ান পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য ডাকা তলবি সভা আপাতত স্থগিত রাখল প্রশাসন। তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের প্রধান সুলেখা টুডুর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে উপপ্রধান-সহ দলেরই ৮ জন পঞ্চায়েত সদস্য গত ২০ অক্টোবর বিডিও-র কাছে লিখিত ভাবে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হিড়বাঁধ শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৫৫
Share:

হিড়বাঁধ ব্লকের মলিয়ান পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য ডাকা তলবি সভা আপাতত স্থগিত রাখল প্রশাসন।

Advertisement

তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের প্রধান সুলেখা টুডুর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে উপপ্রধান-সহ দলেরই ৮ জন পঞ্চায়েত সদস্য গত ২০ অক্টোবর বিডিও-র কাছে লিখিত ভাবে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার প্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য তলবি সভা ডাকা হয়েছিল। প্রধান অনুপস্থিত থাকলেও উপপ্রধান-সহ দলের ৮ জন সদস্য এ দিন পঞ্চায়েত অফিসে উপস্থিত ছিলেন। সভার জন্য মলিয়ানে ব্যাপক পুলিশি বন্দোবস্তও করা হয়। তারই মধ্যে বাঁকুড়ার জেলাশাসকের নির্দেশে বিজ্ঞপ্তি জারি করে এ দিন সভা স্থগিত ঘোষণা করা হয়।

বাঁকুড়ার জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, “ওই পঞ্চায়েতে অনাস্থাকে ঘিরে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে মহকুমা পুলিশ প্রশাসনের তরফে আমার কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। তার ভিত্তিতেই এ দিন ওই পঞ্চায়েতে তলবি সভা আপাতত স্থগিত রাখা হল। শীঘ্রই ওই সভা ডাকা হবে। বিডিও-র মাধ্যমে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ সব সদস্যদের তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

হিড়বাঁধ ব্লকের মলিয়ান পঞ্চায়েতে মোট সদস্য সংখ্যা ১৪। এরমধ্যে তৃণমূলের ১২, সিপিএমের ২ জন। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও এই পঞ্চায়েতে প্রধান পদ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে বিরোধ দেখা দিয়েছিল। একপক্ষ প্রধান হিসেবে চেয়েছিলেন বন্দনা সিং সর্দারকে, অন্য পক্ষ চেয়েছিলেন সুলেখা টুডুকে। ফলে প্রধান নির্বাচন নিয়ে দলের সদস্যদের মধ্যেই ভোটাভুটি হয়েছিল। সুলেখা টুডু ৭টি ভোট পেয়ে প্রধান নির্বাচিত হন। তৃণমূল সূত্রের খবর, সুলেখা টুডু প্রধান নির্বাচিত হলেও দলের একাংশ তাঁকে প্রথম থেকেই মানতে পারছিলেন না। আর তা নিয়ে দলের মধ্যেই বিরোধের চোরাস্রোত এখনও বইছে।

সুলেখা টুডু খাতড়া আদিবাসী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। পঞ্চায়েতে প্রায় দিনই প্রধান গরহাজির থাকেন বলে অভিযোগ তুলে মাসখানেক আগে কর্মীদের আটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। দলীয় সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, আলোচনা না করেই একক ভাবে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া-সহ একাধিক অভিযোগ তুলে সম্প্রতি দলের একটা বড় অংশই সুলেখাকে প্রধান পদ থেকে সরাতে উঠে পড়ে লেগেছেন। যার পরিণতিতে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অনিল হেমব্রম-সহ ৮ জন সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে বিডিও-র কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন। এই ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসে পড়ে।

যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে নারাজ তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্ব। হিড়বাঁধের ব্লক তৃণমূল নেতা ধীরেন্দ্রনাথ মাঝি বলেন, “প্রধানের কিছু আচরণ নিয়ে দলের পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বিরোধ মেটানোর জন্য ওই পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ সকল সদস্যকে কিছুদিন আগে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু প্রধান আসেননি। দলের কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্য নিজেরাই অনাস্থা এনেছেন প্রধানের বিরুদ্ধে। এর পিছনে গোষ্ঠী রাজনীতির কোনও ব্যাপার নেই।” প্রধান সুলেখা টুডু অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। উপপ্রধান অনিল হেমব্রমও অনাস্থা নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি। তবে দলের এক ব্লক নেতা বলেছেন, “অনাস্থার জন্য ডাকা সভা আপাতত স্থগিত হয়ে গিয়েছে। হাতে কিছুটা সময় মিলেছে। শেষ মুর্হূতে সবাইকে নিয়ে বসে বিরোধ মেটানোর চেষ্টা চলছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement