প্রতীকী ছবি
সাত বছর আগে রামপুরহাট থানার উপর-রনিগ্রামে খুন হয়েছিল ১৬ বছরের কিশোরী রানি মুর্মু। একমাত্র মেয়ের খুনের ঘটনায় মা মণি বাস্কি গ্রামের যুবক বুদ্ধদেব টুডুর বিরুদ্ধে রামপুরহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। দীর্ঘদিন রামপুরহাট আদালতে বিচার চলার পরে বৃহস্পতিবার ওই নাবালিকাকে অপহরণ করে খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হল বুদ্ধদেব। এ দিন রামপুরহাট আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য ওই যুবককে দোষী সাব্যস্ত করেন। আজ, শুক্রবার মামলার সাজা শোনাবেন বিচারক।
সরকারী আইনজীবী উৎপল মুখোপাধ্যায় জানান, উপর-রনিগ্রামের বাসিন্দা মণি বাস্কি তাঁর স্বামী ও ছেলে মারা যাওয়ার পরে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে ভাইদের কাছে থাকতেন। স্থানীয় পাথর শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকের কাজ করে মণি তাঁর শেষ সহায় মেয়ের পড়াশোনার বন্দোবস্ত করেছিলেন। রানি নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় গ্রামের যুবক বুদ্ধদেবের সঙ্গে তার মেলামেশা শুরু হয়। দু’জনের সম্পর্কের কথা মণিও জানতেন। ইতিমধ্যে বুদ্ধদেবের অন্যত্র বিয়ের ঠিক হয়। সরকারী আইনজীবী জানান, রানি সে সময় বুদ্ধদেবের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়। তাই তাকে চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার মতলব ফাঁদে বুদ্ধদেব। ২০১২ সালের ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ সে রানিকে তার মামাবাড়ি থেকে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে যায়। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে ধানজমিতে শ্বাসরোধ করে খুন করার পরে বুদ্ধদেব খেত সংলগ্ন বাবলা গাছে গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে রানির দেহ ঝুলিয়ে রেখে দেয়। রানি ঘরে ফিরছে না দেখে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তাঁর মা ও পরিজনেরা। গভীর রাতে বাবলা গাছে দেহ ঝুলতে দেখা যায়।
ঘটনার দশ দিন পরে মণি বাস্কি ওই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ বুদ্ধদেবের বিরুদ্ধে অপহরণ, খুন এবং প্রমাণ লোপের মামলা শুরু করে। ঘটনার তিন মাস পর্যন্ত আত্মগোপন করে থাকার পরে বুদ্ধদেব রামপুরহাট থানায় আত্মসমর্পণ করে। দীর্ঘদিন বিচার চলার পরে বৃহস্পতিবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত।