ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র
তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর চালাল সাব-স্টেশনে। দুই বিদ্যুৎকর্মীকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে বোলপুরের শিবতলা সাব-স্টেশনে। বিদ্যুৎ দফতরের তরফ থেকে বোলপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছে । বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত-সহ বোলপুর শহরেও প্রবল ঝড়বৃষ্টি হয়। তার জেরে শিবতলা সাব স্টেশন এলাকায় থাকা গোপালনগর, সাবিরগঞ্জ-সহ বেশ কিছু এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। গ্রামবাসীরা খবর দেন সাব-স্টেশনে। তাঁদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ কর্মীরা সময় মতো গ্রামে পৌঁছননি। যদিও বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বোলপুরের ডিভিশনাল ম্যানেজার পরিমাণ সরকার বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার ঝড়বৃষ্টির কারণেই শিবতলা সাব-স্টেশন এলাকার কিছু জায়গায় ‘ইলেকট্রিক ব্রেকডাউন’ হয়ে পড়ে। যে এলাকাগুলিতে ব্রেকডাউন হয়েছিল, খবর পাওয়া মাত্রই আমাদের কর্মীরা দ্রুত লাইন ঠিক করার কাজ করছিলেন।’’ তাঁর দাবি, সেই সময় হঠাৎই কিছু লোক সাবস্টেশনে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। সাব-স্টেশনের দুই কর্মীকে মারধর করে। প্রশাসনকে বলা হয়েছে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। প্রহৃত বিদ্যুৎকর্মী ইন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় ও পলাশ
মুখোপাধ্যায়কে রাতেই বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পরে যথেষ্ট আতঙ্কে রয়েছেন সাব-স্টেশনের কর্মীরা। সুজয় কুমার, শেখ সামিউল হকরা বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ চলে হেলেই যদি আমাদের উপরে হামলা হয়।, তা হলে খুবই আতঙ্কের। কাজ করতে ভয় লাগছে। এর আগেও এই সাব-স্টেশনে হামলা করা হয়েছে। আমরা চাই প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করুক।’’ হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার রাজ্য বিদ্যুৎ অস্থায়ী কর্মী সমন্বয় মঞ্চের তরফ থেকে শান্তিনিকেতন গ্রুপ ইলেকট্রিক সাপ্লাই অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিদ্যুৎকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা, হামলার ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি-সহ একাধিক দাবি জানানো হয় মঞ্চের পক্ষ থেকে। কর্মসূচিতে উপস্থিত সমন্বয় মঞ্চের বোলপুর ও সিউড়ি ডিভিশনের সভাপতি মণিময় চট্টোপাধ্যায়, সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক খোকন বীরবংশী, জেলা কমিটির সদস্য সুরজিৎ রায় সহ অনেকেই।
অন্য দিকে, গ্রামবাসীদের দাবি, একটু ঝড়-বৃষ্টি হতে না হতেই সাপ্লাই অফিস থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় বিস্তীর্ণ এলাকায়। ঝড় থেমে যাওয়ার পরেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরে না। বারবার এই নিয়ে অভিযোগ করা হলেও সুরাহা হয়নি।