ধৃত বাড়ির মেজো বৌ। —নিজস্ব চিত্র।
বীরভূমের বোলপুরে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে পরিবারের তিন সদস্যকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় বাড়ির সেজো বৌকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আটক হলেন তাঁর প্রেমিক। রবিবারই ধৃতকে আদালতে তোলা হয়। অন্য দিকে, আটক প্রেমিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গত ৫ জুলাই রাতে খাওয়াদাওয়ার পর বাড়িতে ঘুমোচ্ছিলেন বোলপুর থানার রজতপুরের নতুনগীত গ্রামের বাসিন্দা তোতা শেখ, তাঁর স্ত্রী রূপা বিবি এবং তাঁদের দুই সন্তান আয়ান শেখ ও শেখ রাখ। শেখ তুতা, রূপা, চার বছরের ছেলের সঙ্গে একই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওই ঘরের জানালা খোলা ছিল। অভিযোগ, সেখান দিয়ে কেরোসিন ছড়িয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে কেউ বা কারা পালিয়ে যায়। আগুনে পুড়ে যায় গোটা বাড়ি। অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রথমে মারা যান রূপা এবং তাঁর সন্তান। শনিবার বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তুতাও। এ নিয়ে গোটা এলাকায় শোরগোল শুরু হয়।
একই পরিবারের তিন সদস্যের অস্বাভাবিক মৃত্যুর নেপথ্যে পারিবারিক কোনও অশান্তি ছিল কি না, খোঁজ নেয় পুলিশ। সেখান থেকে পাওয়া গিয়েছে পরকীয়ার ‘তত্ত্ব’। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বাড়ির সেজো বৌ স্মৃতি বিবির সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে এলাকার হাতুড়ে ডাক্তার চন্দন ইসলামের। অগ্নিকাণ্ডের পর চন্দনের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে স্মৃতিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে তারা। সেখানে তিনি ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকার করেছেন। পরে সেজো বৌকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি চন্দনেরও খোঁজ মিলেছে। তাঁকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার বোলপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয় ধৃতকে। তাঁকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। স্মৃতি নাকি ওই নৃশংস ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক পরে বলেন, ‘‘আজ (রবিবার) ধৃতকে বোলপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে পুলিশের তরফ থেকে তাঁকে সাত দিনের জন্য হেফাজতে চাওয়া হয়। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন।’’
হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বোলপুরের গ্রামে যায় ফরেন্সিক দল। আগুনে পোড়া ঘর থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছে তারা। ওই দলের সঙ্গে রয়েছেন পুলিশের আধিকারিকেরাও।