সিউড়ির রাস্তায় ট্রাফিক সামলাচ্ছেন সায়ন। — নিজস্ব চিত্র।
হেলমেট না পরে বাইক নিয়ে ঘুরছিলেন সিউড়ি শহরে। পুলিশ তাঁকে ধরে কোনও জরিমানা করেনি। শাস্তি দিয়েছে। সেই শাস্তি হল, ব্যস্ত রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক সামলাতে হবে তাঁকে। এমনই অভিনব শাস্তি দিয়ে শিরোনামে এসেছে বীরভূম জেলা পুলিশ। অভিযুক্ত ব্যক্তি শাস্তির পর জানান, খুব শিক্ষা হয়েছে! ভবিষ্যতে আর কখনও হেলমেট ছাড়া বাইক চালাবেন না।
বীরভূমের আহমেদপুরের বাসিন্দা সায়ন সেন। শুক্রবার সকালে সিউড়়ি শহরে এসেছিলেন বাইক নিয়ে। মাথায় বালাই ছিল না হেলমেটের। সিউড়ির প্রশাসন ভবনের কাছে তাঁকে ট্রাফিক পুলিশ আটকান। এই সমস্ত ক্ষেত্রে দস্তুর হল, জরিমানা আদায় করা। কিন্তু পুলিশ এ ক্ষেত্রে নতুন পথ ধরল। পুলিশ সূত্রে খবর, হেলমেটহীন অবস্থায় সায়নকে থামানোর পর তাঁকে বাইক থেকে নামানো হয়। তার পর সায়নকে ব্যস্ত রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হয় ট্রাফিক সামলাতে। বেশ কিছু ক্ষণ সেই কাজ করেন সায়ন। তার পর পুলিশের খপ্পর থেকে ছাড় পান।
শাস্তির পর সায়ন বলেন, ‘‘মাথায় হেলমেট ছিল না। জরিমানা নেয়নি পুলিশ। তার বদলে আমাকে দিয়ে ট্রাফিক পুলিশের কাজ করানো হল। জরিমানা করেনি। কিন্তু খুব শিক্ষা হয়েছে। আর কখনও হেলমেট ছাড়া বাইকে হাত দেব না।’’ ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কেবল ওই ব্যক্তিই নয়। এ দিন সকালে আরও এক জনকে একই রকম শাস্তির মুখে পড়তে হয়।
রাস্তায় দু’চাকার দ্রুতগামী যানবাহন চালানোর ক্ষেত্রে হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক। কিন্তু সেই নিয়ম মানার ক্ষেত্রে যে পরিমাণ জনসচেতনতা দরকার, আমাদের সমাজে এখনও তা নেই। তারই ফলশ্রুতি যে কোনও শহরে রাস্তায় বেরোলেই ঘনঘন হেলমেটহীন বাইক আরোহীদের চোখে পড়া। হেলমেট পরা নিয়ে বার বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত আরোহীদের সাবধান করেছেন। এ নিয়ে প্রচারও চলে ব্যাপক। কিন্তু এত প্রশাসনিক তৎপরতার পরেও হুশ ফেরেনি মানুষের। হেলমেট আজও বাইকের সমার্থক হয়ে উঠতে পারেনি। মানুষের সেই হুশ ফেরাতেই এ বার নয়া পথ ধরল সিউড়ির ট্রাফিক পুলিশ। এতে কাজ হবে কি?